Wednesday, October 14, 2015

দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন সরকারের নীল নকশারই বাস্তবায়ন : এমাজ উদ্দীন

দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন করার মাধ্যমে সরকার নিজেদের নীল নকশারই বাস্তবায়ন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজ উদ্দীন আহমেদ। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক ড: পিয়াস করিমের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
এমাজউদ্দীন বলেন, ‘আমি ভেবে অবাক হই যারা দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন করার যে সিদ্ধান্ত গ্রহন করছে তাদের মধ্যে কি এমন কেউ নেই যারা বলবে এটা হয় কি করে ? বাংলাদেশে এটা হওয়ার তো কথা নয়। ’
দেশের গ্রাম অঞ্চলের শান্তিপূর্ণ ভোটকে বিনষ্ট করার জন্যই সরকার এই নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এমাজউদ্দীন বলেন,দেশের গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ব্যক্তি স্বাধীনতা,নিরপত্তাবোধ,এই সরকারের শাসনামলে আমরা হারিয়েছি, আর হারাতে চাই না। তাই সময় এসেছে সরকারের বিরুদ্ধে নতুনভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।
তিনি বলেন, শহীদ মিনারের মালিকানাধীন এমন হাতে চলে গেছে যেখানে শুধু কিছু চেনা মানুষ যেতে পারছেন। শহীদ মিনারের স্মূতি তো এমনটি হতে পারে না।সেখানে কারোর অবদান দেখা হচ্ছে না দেখা হচ্ছে কেবল অনুসারী।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমতউল্লাহর সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন,বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বিগ্রেডিয়ার জে.(অব:) আ স ম হান্নান শাহ,যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ,ব্যারিষ্টার পারভেজ আহমেদ সাবেক কমিশনার ফরিদউদ্দীন আহমেদ প্রমুখ।

নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা শেষ হতেই ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার পর ভোলায় জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। গত রোববার পর্যন্ত মাঝারি ও ছোট আকারের ইলিশ শিকার করেছেন তাঁরা।
মা ইলিশ শিকারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে ৯ অক্টোবর। রাত ১২টায় সময়সীমা শেষ হওয়ার পর ওই রাতেই জেলেরা মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরতে নামেন।
দৌলতখান পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝি সিরাজুল ইসলাম বলেন, অমাবস্যার প্রভাবে মাছ ভালোই পড়ছে জালে। তবে বড় ইলিশ কম। সবই মাঝারি আকারের। পেটে ডিমও নাই; যেগুলোর আছে, সেগুলো ছোট। এক হালি মাছ এক হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের রফিক মাঝি বলেন, নদীতে নেমে দুই জোতে (জোয়ার) ৭৫ হাজার টাকার ইলিশ পেয়েছেন তিনি।
একই ইউনিয়নের আনন্দবাজারের খালেদ মাঝি, তজুমদ্দিন উপজেলার স্লুইসগেট মাছঘাটের আলমগীর মাঝি ও সদর উপজেলার বিশ্বরোডের মাথার সফি মাঝি বলেন, মা ইলিশের প্রজনন মৌসুমের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর থেকে তাঁরা প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকার মাছ পাচ্ছেন।
সদর উপজেলার মাছঘাট চডারমাথা, বিশ্বরোড, তুলাতুলি, ভোলা খাল ঘাটে; দৌলতখান উপজেলার পাতার খাল, চৌকিঘাটা, ভবানীপুর; তজুমদ্দিন উপজেলার স্লুইসগেট, লালমোহনের বাত্তিরখাল ও চরফ্যাশনের সামরাজ ঘাট ঘুরে এবং খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইলিশের বাজার আবার জমজমাট হয়ে উঠেছে।
পাতারখাল নতুন মাছঘাটের আড়তদার আলমগীর হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞার মৌসুম শেষ হওয়ার পরের দুই দিন ভালোই মাছ ধরা পড়েছে।
ভোলার দৌলতখানের মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার ও চরফ্যাশন উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানবলেন, ধরা পড়া মাছের বেশির ভাগ ১১ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা আর ৪০০-৬০০ গ্রাম ওজনের।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রীতিশ কুমার মল্লিক বলেন, তিনি নদীর তীরে গিয়ে দেখেছেন জেলেরা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাচ্ছেন।

স্কুল গেটে ছাত্রীকে খুন করলো বখাটে

স্বপ্নপূরণ হলো না কবিতার। লেখাপড়া শিখে দেশের সেবা করার স্বপ্ন ছিল তার। এ কারণেই পিতার বাড়ি ছেড়ে নানার বাড়ি থেকে লেখাপড়া করতো। কিন্তু বখাটের প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় তাকে জীবন দিতে হলো। গাজীপুরের কালিয়াকৈর টান সূত্রারপুর উত্তর গজারিয়া এলাকায় গতকাল দুপুরে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী কবিতা রানী দাসকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ঘাতক যুবককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। নিহত কবিতা রানী দাস ধামরাই থানার রামপুর এলাকার সাগর মনি দাসের কন্যা। সে কালিয়াকৈর উপজেলার  উত্তর গজারিয়া এলাকায় নানাবাড়ি থেকে স্থানীয় বিজয় সরণি উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। আটককৃত যুবক রামমনি দাসের ছেলে বিক্রম মণিদাস। সে সাভার গণবিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
 পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে  নানাবাড়ি থেকে  উপজেলার সূত্রাপুর এলাকার  বিজয় সরণি উচ্চ বিদ্যালয়ে  টেস্ট পরীক্ষা দিতে আসে কবিতা। এ সময় বিদ্যালয় গেটের কাছাকাছি পৌঁছলে বখাটে বিজয় অতর্কিতে হামলা চালিয়ে কবিতাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্ররা তাকে ধরে গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ এসে ওই বখাটেকে আটক করে। এ সময় মারাত্মক আহত কবিতাকে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথেই মৃত্যু হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেলক্সের কর্তব্যরত ডা. আল-ইমরান মাহমুদ জানান, নিহত কবিতার দেহের বুক, হাত, পেট ও গলার কাছে ছুরিকাঘাত করা হযেছে।  অতিরিক্ত  রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের বাবা সাগর মনিদাস কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, তার মেয়ের স্বপ্ন ছিল  লেখাপড়া করে অনেক বড় হবে। নিহতের নানা ননী গোপাল দাস বলেন, আমার নাতনীর স্বপ্ন ছিল সে লেখাপড়া করে অনেক বড় হবে। কিন্তু ওই ঘাতক সব স্বপ্ন কেড়ে নিল। এসএসসি পরীক্ষাই দিতে পারলো না। বিজয় সরণি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেওয়ান মো. কামরুজ্জামান জানান, কবিতা খুব মেধাবী ছাত্রী ছিল । এ ঘটনার নিন্দা জানানোর কোন ভাষা জানা নেই। তিনি কবিতার ঘাতক বিজয় চন্দ্র সরকারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ ওমর ফারুক জানান, ঘাতক বিজয়কে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে প্রেম সংক্রান্ত বিষয়ে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দূরে বাতিঘর... by মোহাম্মদ বদরুজ্জামান

কুতুবদিয়ার বাতিঘর
এখানে শরতের সকালে যেন অন্য রকম এক আয়োজন চলছে। নদীর বুকে ঠিকরে পড়ছে কোমল আলো। যাত্রীরা পড়িমরি করে উঠছে সমুদ্রগামী ট্রলারে। খুব ভোরে চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গি ঘাটে পৌঁছালাম তড়িঘড়ি। চলেছি সমুদ্রভ্রমণে। ট্রলারের লোকজনের হাঁকডাক দেখে বুঝলাম, ঘাট চিনতে ভুল হয়নি আমাদের। হাঁসফাঁস করে আমরাও উঠলাম সেই ট্রলারের ছাদে।
কর্ণফুলীর বুকে নোঙর করা অসংখ্য জাহাজ, ট্রলার আর কার্গো দৃষ্টি কেড়ে নিল আমাদের। বাস্তবে এত দৈত্যাকৃতির নৌযান তো দেখিনি আগে। কর্ণফুলীর মোহনায় যেতে না যেতেই কোস্টগার্ডের একটি স্পিডবোট এসে থামিয়ে দিল আমাদের ট্রলার। কোস্টগার্ডের কর্মকর্তারা ট্রলারের মাঝিমাল্লাদের শাসিয়ে দিলেন এবং চোখ রাঙিয়ে বুঝিয়ে দিলেন যে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করা অন্যায়। যা হোক, ক্রমেই বঙ্গোপসাগরের অসীম জলরাশির মধ্যে ঢুকে পড়ল আমাদের ট্রলার। আর বাতিঘরের কুতুবদিয়া আমার মধ্যে কৌতূহলও বাড়িয়ে দিল সেই সঙ্গে।
কুতুবদিয়ার বাতিঘর সেই প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময়েই আমাকে রোমাঞ্চিত করেছিল। নাবিকেরা রাতের বেলায় বাতি দেখে জাহাজের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করেন। প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূর থেকে নাবিকেরা কুতুবদিয়ার ঘূর্ণমান বাতি দেখতে পান। ব্যাপারটা কী দারুণ! কিন্তু পাহাড়-পর্বত ভ্রমণে ঝোঁক বেশি থাকায় কুতুবদিয়ার কথা হয়তো ভুলেই বসেছিলাম। এবার ঈদের পর বেড়াতে যাওয়ার বায়না ধরে বসলেন বন্ধু এহসান। সমুদ্রপথে কুতুবদিয়া ভ্রমণের কথা শুনে এহসান নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে ছাড়লেন না।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করে উঠল। ট্রলারে খাবারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় পড়লাম বিপদে। উপকূল ধরে চলছে আমাদের নৌযান। কোথাও বড় বড় ঢেউয়ের সঙ্গে চলে উথাল-পাতাল খেলা। একেক করে কেটে গেল কয়েক ঘণ্টা। এদিকে প্রচণ্ড তাপে অস্থির হয়ে উঠল যাত্রীরা। আনোয়ারা-বাঁশখালীর উপকূল ছেড়ে গভীরে চলে গেলাম ক্রমে। অপেক্ষার যেন শেষ নেই, কুতুবদিয়ারও কূলকিনারা নেই। অবশেষে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর বঙ্গোপসাগরের মাঝে যেন জেগে উঠল অচেনা এক দ্বীপ। বেলা একটার সময় নামলাম দরবার ঘাটে। তারপর জিপে চেপে বড় ঘোপ বাজার।
উত্তর-দক্ষিণে লম্বা কুতুবদিয়া দ্বীপের যোগাযোগব্যবস্থা একেবারে খারাপ না। তবে নিম্নাঞ্চল ও উপকূলের অনেক জায়গায় কাঠ ও বাঁশের সেতু দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। পার্বত্যাঞ্চলের চাঁদের গাড়ির আদলে চলাচলের জন্য এখানে আছে ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়ি (জিপ নামেই বেশি পরিচিত)। টেম্পো আর রিকশাও আছে পর্যাপ্ত। হাতিয়া দ্বীপেও দেখেছিলাম এ রকম যাত্রীবাহী জিপ। মহেশখালী আর সোনাদিয়ার মতো এ দ্বীপেও চলার পথে চোখে পড়ল বড় বড় লবণখেত। নাবিকদের পথ দেখানোর সুবিধার্থে ১৮৪৬ সালে ব্রিটিশ সরকার কুতুবদিয়ায় নির্মাণ করে বাতিঘরটি। দ্বীপটির মধ্যাঞ্চলীয় দক্ষিণ ধুরমং এলাকার পশ্চিম উপকূলে এটি অবস্থিত। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন এ বাতিঘর ১৯৬০ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে হারিয়ে যায় সমুদ্রগর্ভে। ষাটের দশকেই পুনরায় আরেকটি বাতিঘর নির্মাণ করা হয় বেড়িবাঁধের ভেতরে। তবে ভাটার সময় পুরোনো বাতিঘরের ধ্বংসাবশেষের কিছু অংশ এখনো দেখা যায়।
হোটেলের বারান্দা থেকে সাগরের অসীম জলরাশি চোখে লাগাল ভেলকি। কুতুবদিয়া দ্বীপের পশ্চিম কূলজুড়ে সমুদ্রতট। তবে মূল সৈকত বড় ঘোপ আর ধুরুং এলাকাজুড়ে। কোথাও কোথাও ঝাউবন ঘেরা সৌন্দর্যের হাতছানি। সুন্দর তটে ফুটবল আর ক্রিকেট খেলায় মেতে ওঠেন এখানকার তরুণেরা। সূর্যাস্তের আগেই নেমে পড়লাম সৈকতে। বালুহীন সমুদ্রতটে পা ছোঁয়াতেই ভিন্ন রকম এক অনুভূতি। সূর্যাস্তের পর গোধূলির আলো স্মিত হওয়ার আগেই বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজের আলো ছড়িয়ে পড়ল পানিতে। সে এক অসাধারণ দৃশ্য!
রাতের সৈকত অন্য রকম রূপ নিয়ে হাজির। পূর্ণিমার জোছনাস্নাত তটে বসে জোয়ারের গর্জন রোমাঞ্চিত করল আমাদের। সাগরের বুকে নোঙর করা আলোকময় জাহাজে ভাসতে ইচ্ছে করল। দক্ষিণ ধুরুংয়ের বাতিঘরের আলো উদ্দীপনা জাগাল বেশ। যার আলোয় নাবিকদের দুচোখ চিকচিক করে ওঠে।
সকালে আবার গেলাম সৈকতে। একেবারে নির্জন ও শান্ত-কোমল সাগর পাড়। ভেজা তটে হাঁটলাম ঘণ্টা খানেক। লাল কাঁকড়ার খেলা দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না। সোনাদিয়া সৈকতের মতো এখানেও প্রচুর লাল কাঁকড়ার বিচরণ। সোনাদিয়ায় দেখা যায় এদের দলবদ্ধভাবে চলতে। এখানে বিচ্ছিন্নভাবে।
বড় ঘোপ স্টিমার ঘাটে মানুষের ভিড়। ফেরার অপেক্ষায় আছি, এমন সময় গোঁ গোঁ শব্দ করে একটি স্পিডবোট ঘাটে এসে ভিড়ল। দ্রুতগামী সে যানে চেপে পাড়ি দিলাম কুতুবদিয়া চ্যানেল। মগনামা ঘাটে এসে মনে হলো, ওপারের বিচ্ছিন্ন দ্বীপটি কীভাবে যেন গড়ে দিল মনের মধ্যে এক সেতু।
সূর্য নেমে যায় যেন সমুদ্রে। ছবি: সোলাইমান হোসেন
যেভাবে যাবেন
কয়েকটি রুটে যাওয়া যায় দ্বীপ কুতুবদিয়ায়। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে চট্টগ্রামে এসে ফিরিঙ্গি ঘাটে কুতুবদিয়াগামী ট্রলার ধরতে হবে। সকাল ছয়টা থেকে সাতটার মধ্যে দুটি ট্রলার ছেড়ে যায় কুতুবদিয়ার উদ্দেশ্যে। কুতুবদিয়ার বড় ঘোপ স্টিমার ঘাটে নেমে উপজেলা সদরে যেতে পারবেন রিকশায় চেপে।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ঘাট পর্যন্ত এস আলম পরিবহনের মিনি বাস যাতায়াত করে। বহদ্দারহাট কিংবা শাহ আমানত সেতুর কাছ থেকে উঠতে পারবেন বাসে। মগনামা ঘাট থেকে স্পিডবোট কিংবা ট্রলারে চেপে পার হবেন কুতুবদিয়া চ্যানেল।
ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী বাসে চেপে নামতে পারেন চকরিয়া বাজারে। চকরিয়া থেকে মগনামা ঘাট যাওয়া যায় জিপ কিংবা সিএনজিচালিত অটোরিকশায়। এটাই অপেক্ষাকৃত সহজ পথ। তবে যাদের পানিভীতি কম, ট্রলারে সমুদ্র ভ্রমণের সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না।
প্রয়োজনীয় তথ্য
কুতুবদিয়া দ্বীপ ভ্রমণের জন্য শীতকাল বেছে নিন। কারণ, এ দ্বীপে শীতকালে লবণ চাষ হয়। শুঁটকির প্রক্রিয়াকরণও চলে শীত মৌসুমে। আর মাছও পাওয়া যায় পর্যাপ্ত। এ ছাড়া তাপ কম থাকায় সমুদ্রপথে ট্রলার ভ্রমণটাও হবে আরামদায়ক। ট্রলারে যাওয়ার সময় সকালের নাশতা সঙ্গে নিতে ভুলবেন না। কুতুবদিয়ার সৈকত পরীক্ষিত না। তাই জোয়ার ছাড়া অন্য সময়ে পানিতে নামা নিরাপদ নয়। বড় ঘোপ বাজারে থাকা ও খাওয়ার হোটেল আছে।
দ্বীপ কুতুবদিয়া

রিভিউ আবেদন নিয়ে মুজাহিদের দুই প্রশ্ন by হাবিবুর রহমান

সুপ্রিম কোর্টের আপিল রায় রায় পর্যালোচনা করে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ রিভিউ আবেদন দায়ের করার জন্য আইনজীবীদেরকে তার সুনির্দিষ্ট মতামত দিয়েছেন। তিনি রিভিউ আবেদনে গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন।
প্রশ্ন দুটি হলো
প্রথম প্রশ্ন : মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেরায় স্পষ্টভাবে স্বীকার করেছেন যে, রাজাকার, আলবদর, শান্তি কমিটি কোন তালিকায় মুজাহিদের নাম নেই। হঠাৎ করে ৪২ বছর পর কিভাবে তিনি আলবদরের কমান্ডার হয়ে গেলেন? তিনি আলবদর কমান্ডার হলেন কি করে?
দ্বিতীয় প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে তিনি ২৩ বছর বয়সের একজন ছাত্র ছিলেন। একজন ছাত্র কিভাবে আধা-সামরিক বাহিনীর কমান্ডার হতে পারেন? কে কখন কোথায় তাকে এই পদে নিয়োগ দিলেন এই মর্মে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো মৌখিক বা দালিলিক সাক্ষ্য উপস্থাপন করতে পারেনি।
আজ মঙ্গলবার বিকাল ৩ টায় আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের সাথে তার পাঁচ আইনজীবীর সাক্ষাতে রিভিউ আবেদনে এই দুটি প্রশ্ন রাখার পরামর্শ দেন।
মুজাহিদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: শিশির মনির বলেন, তার এই মতামতগুলো পুনর্বিবেচনার আবেদনে (রিভিউ পিটিশন) অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং আগামীকাল সকালে মহামান্য আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিভিউ পিটিশনটি দায়ের করা হবে।
তিনি বলেন, মুজাহিদ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি মনে করেন মহামান্য আপিল বিভাগ তার পুনর্বিবেচনার আবেদনটি মঞ্জুর করবেন এবং দন্ড মওকুফ করে বেকসুর খালাস প্রদান করবেন।
তিনি দেশবাসীকে সালাম জানিয়েছেন, সবার দোয়া চেয়েছেন।

কঠোর গোপনীয়তায় কুনিও হোশির লাশ দাফন

রংপুরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত জাপানি নাগরিক কুনিও হোশির লাশ স্থানীয় মুন্সিপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। গতরাত আড়াইটার পর কোনো এক সময় কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে তাকে দাফন করা হয়। জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কবরস্থানের রেজিস্ট্রারে এখনো পর্যন্ত কুনিও হোশির নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
এর আগে সকালে রংপুরের মেয়র শরফুদ্দিন ঝন্টু রাত আড়াইটার দিকে তার কাছ লাশ দাফনের অনুমতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোথায় তাকে দাফন করা হয়েছে তা জানাননি তিনি।
সূত্র জানিয়েছে, রাত দেড়টায় রংপুর মেডিক্যালের হিমঘর থেকে লাশ নেয় প্রশাসন। এরপর রাত আড়াইটায় সিটি মেয়রেরর কাছে দাফনের অনুমতি চায়। তিনি অনুমতি দেয়ার পর রাতেই তাকে কঠোর গোপনীয়তায় দাফন করা হয়।
এদিকে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের পর কুনিও হোশির লাশ এত কঠোর গোপনীয়তায় দাফন করায় জনমনে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ৩ অক্টোবর নগরের উপকণ্ঠে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন কুনিও হোশি। এরপর থেকে তার লাশ রংপুর মেডিক্যাল কলেজের হিমঘরে রাখা হয়। কিন্তু কুনিও হোশির স্বজনদের পক্ষ থেকেও তার লাশ নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়নি। আবার বাংলাদেশে দাফন করার ব্যাপারে জাপান সরকারের কোনো আপত্তি নেই বলে জানানো হয়। তাই রংপুরের স্থানীয় প্রশাসনকে জাপান দূতাবাসের সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত চিঠি রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারকে পাঠানো হয়।

দামেস্কের রুশ দূতাবাসে রকেট হামলা

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে রুশ দূতাবাসে মঙ্গলবার দুটি রকেট আঘাত হেনেছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমর্থন ঘোষণা করার প্রেক্ষাপটে এই হামলা হলো। হামলার পর ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
কোন পক্ষ হামলাটি চালিয়েছে তা জানা যায়নি। আসাদবিরোধী গ্রুপগুলো অতীতে রুশ দূতাবাসকে টার্গেট করেছিল। কিন্তু এবার তারাই তা করেছে কি না তা তারা দাবি করেনি।
হামলায় কেউ হতাহত হয়েছে কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। দামেস্কের পূর্ব প্রান্ত থেকে রকেট দুটি নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে।
এছাড়া শত শত সিরিয়ান দূতাবাসের কাছে গিয়ে আসাদের প্রতি রুশ সমর্থনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান দুই কারারক্ষী বরখাস্ত

প্রিজন সেলে বন্দীর সাথে স্বজনদের কথা বলানো এবং শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফের সাথে কথা বলার অভিযোগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের দুই প্রধান কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার প্রিজন সেলে ঘটনাটি ঘটে। পরে আইজি প্রিজনের নির্দেশে তাদের দুজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে কারাগারের একাধিক সুত্র জানিয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নেছার উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রধান কারারক্ষীরা দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার প্রধান কারারক্ষী নজরুল ইসলামের ডিউটি ছিল বারডেম হাসপাতালে। আরেক কারারক্ষী জসিম হাবিলদারের ডিউটি ছিল প্রিজন সেলে। কিন্তু প্রধান কারারক্ষী নজরুল বারডেমের বন্দীদের দায়িত্ব পালন না করে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে এসে দেখা করেন তালিকার্ভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী জোফেসের সাথে। ওই সময় প্রিজন সেল ভিজিট করতে যান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একজন ডেপুটি জেলার। তিনি জোসেফের সাথে প্রধান কারারক্ষী নজরুলকে কথা বলতে দেখেন। পরে তিনি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করেন। এরই প্রেক্ষিতে প্রধান কারারক্ষী নজরুল ও হাবিলদার জসিমকে কৈফিয়ত তলব করা হয়। কিন্তু এরই মধ্যে আইজি প্রিজন ঘটনটি জানতে পেরে দুজনকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন।

Tuesday, September 29, 2015

মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে খ্রিস্টান-মুসলিম দাঙ্গায় নিহত ৭০

মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে খ্রিস্টান-মুসলিম দাঙ্গায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭০-এ দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় ধ্বংস হয়েছে কয়েক ডজন ঘরবাড়ি। সংঘর্ষ ও লুটপাট অব্যাহত রয়েছে।
দেশটির রাজধানী বাঙ্গুইয়ে এক মুসলিম ব্যক্তির লাশ পাওয়ার প্রতিবাদে খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকায় হামলা চালায় মুসলমানরা। এতে শনিবার ২১ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়।
এরপর রোববার রাজপথ দখলে নেয় খ্রিস্টান বিদ্রোহীরা। সশস্ত্র খ্রিস্টান জঙ্গিরা রাজধানীর সড়কগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের চলাচল ঠেকাতে তারা রাজধানীর বাঙ্গুইয়ে ব্যারিকেড দিয়েছে।
যুবকরা বাঙ্গুইয়ের প্রধান সড়কগুলো গাছের গুড়ি ফেলে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। শান্তিরক্ষীরা সড়ক অবরোধ ভাঙতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করলেও তা কাজে আসেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, শহরে বিক্ষিপ্ত গোলাগুলি হচ্ছে এবং ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে লুটপাট চলছে।
দেশটিতে শান্তিরক্ষার কাজে নিয়োজিত আছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী এবং ফরাসি সেনারা।
সরকার রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেছে।
সরকার বলছে, আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন বানচাল করার জন্যই এই সংঘাতের সৃষ্টি।
খ্রিস্টান প্রধান দেশটিতে ২০১৩ সালে মুসলিম সেলেকা বিদ্রোহীরা ক্ষমতা দখলের পর দুই বছর ধরে সহিংসতায় হাজার হাজার লোক মারা গেছে।
সূত্র : ইউরো নিউজ ও আল-জাজিরা অনলাইন

Friday, September 25, 2015

পুলিশের বেআইনি আচরণ করার কারণ : ডয়েচে ভেলের বিশ্লেষণ

বাংলাদেশে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি আটক, গ্রেপ্তারের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে৷ আইনজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীরা মনে করেন, এ সব বেআইনি কাজের প্রধান কারণ পুলিশের ওপর সরকারের অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতা৷
সর্বশেষ ঘটনা : সন্তানের সামনে মা-কে নির্যাতন
১৮ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হন৷ ঐ এলাকায় ছেলের সামনে মাকে নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ নির্যাতকারীদের পক্ষ নেয়৷ স্বাভাবিকভাবেই এতে জনতা প্রতিবাদী হলে তাদের দমন করতে গুলি চালায় পুলিশ৷
১১ মাসের শিশুকে আটক
১৬ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার একটি মামলায় রাজু আহম্মেদ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ তাঁর স্ত্রী লিপি আক্তার এবং মাত্র ১১ মাস বয়সি শিশুপুত্র রাসেলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়৷ থানা হাজতে আটকের ১৯ ঘণ্টা পর ৪২ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের মুক্তি দেয়া হয়৷
পঙ্গু মানুষের হাতে হাতকড়া
১৫ই সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে আবুল হোসেন নামে এক পঙ্গু আসামিকে হাতকড়া পড়িয়ে আদালতে নেয় পুলিশ৷ আবুল হোসেনের দুই পা-ই নেই৷
মাদক মামলায় শিশু গ্রেপ্তার
৭ই সেপ্টেম্বর সাগর শেখ (১২) ও রবিন আলী (১৪) নামের দুই শিশুকে মাদক মামলায় হাতকড়া পরিয়ে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করে কাফরুল থানা পুলিশ৷
পুলিশের কাছে পদোন্নতিই বড়, জনগণ নগন্য : এলিনা খান
ওপরের চারটি ঘটনাই চলতি সেপ্টেম্বর মাসের৷ তাই এর আগে থেকে হিসেব করলে এমন ঘটনার সংখ্যা বাড়তেই থাকবে৷
বাংলাদেশে নারী ও শিশু আইনে স্পষ্ট বলা আছে নারী ও শিশুদের প্রতি পুলিশকে কী ধরনের আচরণ করতে হবে৷ কী ধরনের আচরণ করতে হবে পঙ্গু বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঙ্গে৷ অথচ তারপরও পুলিশ কেন আইন লঙ্ঘন করছে?
এ প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পুলিশ আইন জেনেও আইনের লঙ্ঘন করছে৷ এর কারণ তাদের অসততা এবং সুবিধা লাভের প্রবণতা৷ আমি বলব তারা জ্ঞানপাপী৷''
পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা-মামলা হওয়া উচিত: জ্যোতির্ময় বড়ুয়া
ওদিকে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পুলিশকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ পুলিশ অপরাধ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না৷ কারণ সরকার অতিমাত্রায় পুলিশ নির্ভর হয়ে পড়েছে৷ আর পুলিশ এই সুবিধা নিয়ে তাদের স্বার্থ হাসিলের কাজ করে চলেছে৷ পেশাদারিত্ব ভুলে গেছে তারা৷''
এ দু'জনই মনে করেন, যদি পুলিশকে রাজনীতির বাইরে রেখে জবাবদিহিতার আওতায় আনা না হয়, তাহলে এ ধরণের বেআইনি ঘটনা আরো বাড়বে৷ বার বার এমন বেআইনি ঘটনা ঘটাবে পুলিশ৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে

Thursday, September 24, 2015

মিনায় পদদলিত হয়ে ৭১৭ হাজির মৃত্যু

সৌদি আরবের মিনায় পদদলিত হতাহত হাজিদের
উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছেন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।
ছবি: ফেরদৌস ফয়সাল, মিনা থেকে
সৌদি আরবের মিনায় পদদলিত হতাহত হাজিদের
উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছেন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।
ছবি: ফেরদৌস ফয়সাল, মিনা থেকে
সৌদি আরবের মিনায় পবিত্র হজ পালনকালে আজ বৃহস্পতিবার পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ৭১৭ জন হাজির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। সৌদি আরবের সিভিল ডিফেন্সের পরিচালকের দপ্তর এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। খবর এএফপি, রয়টার্স ও আল জাজিরা
সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফ ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিচালকের দপ্তর জানিয়েছে, হজের শেষ পর্যায়ের আনুষ্ঠানিকতা মিনার বড় জামারাকে (বড় শয়তান) লক্ষ্য করে কঙ্কর মারতে যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। পদদলিত হয়ে ৭১৯ জন হাজি আহত হয়েছেন।
সিভিল ডিফেন্সের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আহতদের উদ্ধার করে মিনা অঞ্চলের চারটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এখনো উদ্ধার কাজ চলছে। উদ্ধারকাজে চার হাজারের মতো কর্মী অংশ নিচ্ছেন। ঘটনাস্থলে ২২০টি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদক মিনা থেকে জানিয়েছেন, শয়তানকে পাথর মারতে যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মিনা থেকে আমাদের প্রতিবেদক ফেরদৌস ফয়সাল জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিনার ২০৪ নম্বর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তীব্র গরম ও হাজিদের তাড়াহুড়োর কারণে এমনটি ঘটেছে। ঘটনাস্থল দেখে তাঁর মনে হয়েছে, বয়স্ক ও নারী হাজিরা দুর্ঘটনায় বেশি হতাহত হয়েছেন। এই সড়কটি মূলত আরব ও আফ্রিকান হাজিরা ব্যবহার করে থাকেন। বাংলাদেশিরা সাধারণত এই সড়কে চলাচল করেন না।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বাংলাদেশি হাজির সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। এঁদের মধ্যে একজন ভিড়ের মধ্যে পড়ে সামান্য আহত হয়েছেন বলে জানান। তবে পরিবার দুশ্চিন্তা করবে বিবেচনায় তিনি তাঁর নাম প্রকাশ করতে চাননি। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, প্রায় পাঁচ-ছয় কিলোমিটার ধরে তাঁরা হাঁটছিলেন। তীব্র গরমে বয়স্ক ও নারীদের হাঁটার গতি কমে আসছিল। কিন্তু পেছনের অনেকেই স্বাভাবিক গতিতেই সামনে এগোচ্ছিলেন। এ সময় হুড়োহুড়িতে ওই সড়কের ৮/২০৪ থেকে ১২/২০৪ নম্বর তাঁবুর স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আল-আরাবিয়া নিউজ চ্যানেলের প্রতিনিধি আবদুল রহমান আল-ওসামি মিনা থেকে জানিয়েছেন, ২০৪ নম্বর সড়কের কাছে জামারাত সেতুর প্রবেশমুখ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপের স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটেনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা গেছে, সে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। সড়কে হতাহত হাজিরা পড়ে আছেন।
কেন্দ্রীয় হজ কমিটির প্রধান প্রিন্স খালেদ আল-ফয়সাল এ দুর্ঘটনার জন্য ‘কিছু আফ্রিকান জাতীয়তার’ হাজিদের দায়ী করেছেন বলে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আল-আরবিয়া টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এবার ২০ লাখের মতো মুসলমান হজ পালন করছেন। এর আগেও হজ পালন করতে গিয়ে নানা সময়ে পদদলিত হয়ে হাজিরা মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৯০ সালে মক্কায় পদদলিত হয়ে ১ হাজার ৪২৬ জন হাজির মৃত্যু হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে মিনায় (বড় শয়তান) লক্ষ্য করে কঙ্কর ছুড়ে মারার সময় পদদলিত হয়ে ১৮০ জন হাজির মৃত্যু হয়। ২০০১ সালে মিনায় পদদলিত হয়ে মারা যান ৩৫ জন। ২০০৬ সালে মিনায় পাথর নিক্ষেপের সময় দুর্ঘটনায় ৩৬০ জনের বেশি হাজির মৃত্যু হয়।
এ বছরের ১১ সেপ্টেম্বর হজ চলাকালে মক্কায় মসজিদুল হারামে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ক্রেন ভেঙে পড়ে ১১১ জন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন আরও ৪০০ জন।
সৌদির সিভিল ডিফেন্সের টুইটারে প্রথম এই দুর্ঘটনার খবর জানায়।
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফ ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আল-আরাবিয়া নিউজ চ্যানেলের প্রতিনিধি আবদুল রহমান আল-ওসামি মিনা থেকে জানিয়েছেন, ২০৪ নম্বর সড়কের কাছে জামারাত সেতুর প্রবেশমুখ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপের স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটেনি।

হিন্দু দেব-দেবীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটালে জিভ কেটে নেয়ার হুমকি রাম সেনার

ভারতে হিন্দু দেব-দেবীর বিরুদ্ধে কুৎসা করা হলে জিভ কেটে নেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে ডানপন্থি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংস্থা রাম সেনা। সংগঠনের কর্ণাটক রাজ্যের কো-অর্ডিনেটর সিদ্দালিঙ্গা স্বামী এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘লক্ষ লক্ষ মানুষ আমাদের ধর্মীয় গ্রন্থ রামায়ণ, মহাভারতকে পবিত্র গ্রন্থ বলে মনে করেন। যদি দেব-দেবী নিয়ে কুৎসা লেখা হয় তা মানুষ কখনোই সহ্য করবে না। হিন্দু দেব-দেবতাদের অপমান করা থেকে লেখকরা বিরত না হলে সাধারণ মানুষ তাদের জিভ কেটে ফেলবে।’     গত ৩০ আগস্ট কর্ণাটক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর এম এম কালবুর্গি দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে নিহত হন। নিহত কন্নড় গবেষক এম এম কালবুর্গি ধর্মীয় কট্টরপন্থা এবং কুসংস্কারের বিরুদ্ধে অনেকবার আওয়াজ তোলায় তিনি বিভিন্ন হিন্দু মৌলবাদী সংগঠনের টার্গেট হয়েছিলেন। তিনি মূর্তিপূজোর বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করায় মৌলবাদীরা তার তীব্র বিরোধিতা করে।   বজরং নেতা ভুভিত শেঠি কালবুর্গি হত্যায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে  টুইট করে লেখেন, ‘প্রথমে ইউ আর অনন্তমূর্তির পর এবার এম এম কালবুর্গি। হিন্দু ধর্মকে ছোট করলে কুকুরের মতোই মরতে হবে। কে এস ভগবান এবার  আপনার পালা।’   গত রোববার রাম সেনার এক নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে লেখকদের হুমকি দেয়ার অভিযোগ ছিল। যদিও সংগঠনের নেতা প্রমোদ মুতালিকের দাবি, ধৃত ব্যক্তি তাদের কেউ নন।   উগ্র হিন্দুত্বের সমালোচনা করায় গেরুয়া শিবিরের টার্গেটে পরিণত হন মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক কে এস ভগবান। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিশ্বেশ্বর তীর্থ স্বামীকে হিন্দু শাস্ত্র নিয়ে বিতর্কের চ্যালেঞ্জ জানানোয় হুমকির মুখে পড়েছেন তিনি।   সংবাদে প্রকাশ, কে এস ভগবান এক টিভি চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন রাম এবং কৃষ্ণকে পুজো করা উচিত নয়। কারণ, তারা মানবীয় মুল্যবোধ অনুসরণ করেননি।-আইআরআইবি

মিনায় পদদলিত হয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭১৭

সৌদি আরবে হজ পালনের সময় মিনায় পদদলিত হয়ে অন্তত ৭১৭ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির টেলিভিশন আল-আখবারিয়া ও সৌদি গেজেট পত্রিকা এ তথ্য জানিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সৌদি আরবের বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষ টুইটারে জানিয়েছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৮০৫ জন। যত সময় যাচ্ছে এ ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা বাড়ছে। মিনার এই হতাহতের ঘটনায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শোক প্রকাশ করেছেন। মুজদালিফা থেকে শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপের জন্য মুসল্লিরা মিনায় যাচ্ছিলেন। এ সময় পদদলিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে। জায়গাটি মক্কা থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে। এ ঘটনায় আহতদের স্থানীয় মিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রায় চার হাজার উদ্ধারকর্মী ও ২৫০টি অ্যাম্বুলেন্স আহতদের উদ্ধারে নিয়োজিত রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২০ লক্ষাধিক মানুষ মক্কায় হজ পালন করতে গেছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মনসুর আল-তুর্কি বলেন, ‘মিনায় একটি পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে এবং বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষ তদারকি করছে।’ বিবিসি জানিয়েছে, শয়তানের উদ্দেশে পাথর মারার রীতি পালনের সময় পদদলনের ঘটনা ঘটে। হজ ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। এটি পালন করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য ফরজ। গত ১১ সেপ্টেম্বর হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগের দিন সৌদি আরবের মসজিদ আল-হারামে দুর্ঘটনা ঘটে। প্রবল বাতাসের কারণে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত একটি ভারি ক্রেন মসজিদের ওপর ভেঙে পড়ে। এতে শতাধিক মানুষ নিহত হন। এছাড়া আহত হন প্রায় ২৫০ জন। এর আগে ২০০৬ সালের ১২ জানুয়ারি মক্কার জামারাত সেতু থেকে নামার সময় পদদলিত হয়ে মারা যান অন্তত ৩৪০ জন হজযাত্রী। এ সময় আহত হন আরো অন্তত ২৯০ জন।

কাবাঘরের চাবি by আসিফ হাসান

কাবা আল্লাহর ঘর। এই ঘরকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করার চেষ্টা সবসময়ই দেখা গেছে। এই ঘরের সেবা অত্যন্ত সোয়াবের কাজ বিবেচিত হয়ে আসছে। ফলে অনেকবারই এর সৌন্দয় বাড়ানোর কাজ করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবেই কাবাঘরের দরজা সোনা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
১৩৯৬ হিজরিতে বাদশাহ খালেদ ২৮৬ কেজি সোনা দিয়ে বর্তমান দরজাটি তৈরি করেছেন। এতে আল্লাহপাকের নাম এবং কোরআনের আয়াত লেখা রয়েছে। কাবা শরিফের দরজাটিতে দুটি অংশ রয়েছে। মাঝখানে তালা আছে।
কাবাঘরের দরজা
এই তালার চাবি কটি বিশেষ বনু তালহা গোত্রের গোত্রের কাছে থাকে। প্রাচীন কাল থেকেই তাদের হাতে রয়েছে কাবাঘরের চাবি। তবে প্রথম আমলের তালা যেমন এখন আর নেই, চাবিও নেই। তবে বর্তমানটির পাশাপাশি পুরান আমলের অনেক চাবি এখনো অত্যন্ত যত্নের সাথে সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। কাবার বর্তমান চাবিটি ৩৫ সেন্টিমিটার। বিশেষভাবে বানো বাক্সে রাখা হয় এই চাবিটি।
কাবাঘরের একটি পুরাতন চাবি
এমনকি মক্কা বিজয়ের পর অনেক কিছুতে পরিবর্তন হলেও মহানবি (সা.) এই গোত্রের হাতেই কাবাঘরের চাবিটি রেখে দেন। ফলে তারাই কাবাঘরের আনুষ্ঠানিক সেবক।
মক্কা বিজয়ের দিন তাদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে কাবাঘরকে পবিত্র করেন। পরে তাদের হাতেই চাবি ফিরিয়ে দেন।
এ সময় তিনি বলেন : ‘হে বনি আবদুদ দুর কিয়ামত পর্যন্ত চির দিনের জন্য এই চাবি গ্রহণ করো। জালেম ছাড়া কেউ তোমাদের কাছ থেকে এই চাবি ছিনিয়ে নেবে না।’
কাবাঘর সংরক্ষণের কাজে নিয়োজিতদের আরবিতে 'সাদালাতুল কাবা' বলা হয়। বনু তালহা গোত্রের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি কাবার চাবি বহন করেন।

Wednesday, September 23, 2015

শরণার্থীরা হতে পারে জার্মানির জনশক্তি

দলবেঁধে আসা শরণার্থীদের একধরনের বাড়তি বোঝা বলে মনে করে ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ। কাঁটাতারের বেড়া, পুলিশের পিটুনি, কাঁদানে গ্যাস দিয়ে এই জনস্রোত আটকে রাখছে। ঢুকতে দিচ্ছে না। এ ব্যাপারে ব্যতিক্রম জার্মানি। তুরস্কের সাগরতীরে সিরীয় শরণার্থী তিন বছরের শিশু আয়লানের নিথর দেহ ভেসে আসার পর জার্মানিই প্রথম সাহস দেখায়। দুয়ার খুলে দেয় শরণার্থীদের জন্য। ফুল, চকলেট, গরম কাপড় দিয়ে মিউনিখ স্টেশনে হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানায় শরণার্থীদের। তবে আট লাখ শরণার্থী নেওয়ার পর অনেকটা কঠোর হয় তাঁরা। সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শরণার্থী নিয়ে এত বড় সংকটে আর পড়েনি ইউরোপ-এ কথা স্বীকার করেছে জার্মানি। এ বছর তাই দেশটি আট লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে ১৫ সেপ্টেম্বর জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর সিগমার গ্যাব্রিয়েল বলেন, তাঁদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমান, এই সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।
অন্য দেশগুলো যেখানে শরণার্থীদের বোঝা মনে করে, জার্মানি সেখানে তাদের কাজে লাগাতে চায়। নিজেদের অর্থনৈতিক শক্তি বাড়াতে চায়। শ্রমবাজারকে গতিশীল করতে চায়। কারণটা খতিয়ে দেখলে বোঝা যায়, এদের নিয়ে জার্মানির ভাবনা সুদূরপ্রসারী।
বার্লিনে গত কয়েক বছরে জনসংখ্যা ক্রমশ কমছে। দেশটিতে জনসংখ্যার জন্মহারের চেয়ে মৃত্যুহার বেশি। হিসেব করে দেখা গেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বার্লিনে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ৬০ লাখ কমে যাবে। দেশটির ভাইস চ্যান্সেলর অর্থমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েল গতকাল বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে বলেন, যদি জার্মানি দ্রুত প্রশিক্ষণ দিয়ে শরণার্থীদের কর্মসংস্থান করতে পারে, তাহলে অর্থনৈতিক সংকট এড়ানো সম্ভব। তারাই তখন অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে। শরণার্থীদের প্রশিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তোলা জার্মান সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত।
এ বছর আসা আট লাখ শরণার্থীকে ঘিরে এর মধ্যেই জার্মানিতে ক্ষুদ্র ব্যবসা গড়ে উঠেছে। ব্যবসার ক্ষেত্র আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। জার্মানির ডর্টমুন্ড শহরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ড্যানিয়েল কক। তিনি গৃহনির্মাণসামগ্রীর ব্যবসা করেন। শরণার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্যবসার কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। স্থানীয় বাণিজ্যিক সংস্থার পরামর্শে এ উদ্যোগ নেন কক। আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়ার শরণার্থী তেসভাজেব্রিয়েল আবরাহা নির্মাণকাজের কলাকৌশল জানতেন না। দুই সপ্তাহ প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর তিনি দক্ষতা অর্জন করেন। তবে শরণার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো দক্ষ লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হয় বলে জানান কক।
জার্মানির আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিআইডব্লিউয়ের প্রধান মার্সেল ফ্রাৎজশার বলেন, গত পাঁচ বছরে ইউরোপে প্রায় দেড় লাখ নতুন চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। নতুন চাকরির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই পূরণ করেছে শরণার্থীরা। ফ্রাৎজশার বলেন, জার্মানির অর্থনীতিকে গতিশীল করতে তাঁদের আরও নতুন কর্মী দরকার। ডর্টমুন্ডের স্থানীয় বাণিজ্যিক সংস্থা এইচডব্লিউকের মুখপাত্র বলেছেন, এই শহরে অনেক শিল্প কারখানায় চাকরির সুযোগ আছে। কিন্তু যোগ্য কর্মী পাওয়া যাচ্ছে না। জার্মানরা সাধারণত উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী। শিক্ষাজীবন শেষ করার আগে তাঁরা কোনো কাজ জড়াতে চান না। এতে শিল্প কারখানাগুলোর অনেক পদই শূন্য থাকে। এসব ক্ষেত্রে জার্মানি শরণার্থীদের কাজে লাগাতে চায়।
জার্মানির জনবহুল নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যে শরণার্থীদের এক-পঞ্চমাংস আশ্রয় নিয়েছেন। এই রাজ্যের শহর ডর্টমুন্ডে প্রায় চার হাজার শরণার্থী এসেছে। তাঁদের কর্মসংস্থানের কথা ভাবা হচ্ছে। এ বছরের শুরুতে সিরিয়া, আফ্রিকার কঙ্গো ও ইরিত্রিয়া থেকে আসা ৮৫ জন শরণার্থীর অঙ্ক ও ভাষা বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এর পরে তাঁদের বৈদ্যুতিক, যান্ত্রিক, ধাতব পদার্থ ও নির্মাণসামগ্রীর কাজের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এইচডব্লিউকের মুখপাত্র বলেন, কিছু প্রতিষ্ঠান শরণার্থীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এসব শিক্ষানবিশ শরণার্থীদের খুব কম বেতনে কাজ করানো হয়। প্রতি ঘণ্টায় নির্ধারিত সর্বনিম্ন বেতন ৮ দশমিক ৫০ ইউরোরও কম পান তাঁরা। তাদের বেতনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই। ডর্টমুন্ডে এইচডব্লিউকের প্রধান বার্টহোল্ড শ্রোয়েডার শরণার্থীদের জনশক্তিতে কাজে লাগানোর এই পাইলট প্রকল্পের উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান শরণার্থীদের কাজ দেয় তাঁরা নানাভাবে সহায়তা করে। অনেক সময় থাকার বন্দোবস্তও করে দেয়। তবে একেবারে অদক্ষ ও অশিক্ষিত শরণার্থীরা জার্মানির জন্য গোদের ওপর বিষফোড়া হয়ে দাঁড়ায়।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টমাস ডি মেজিয়র বলেন, সিরীয় শরণার্থীদের অনেকে উচ্চশিক্ষিত। আবার অনেকে স্বল্প শিক্ষিত। এরা দেশের জন্য একধরনের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। শ্রমমন্ত্রী আন্দ্রে নাহলেস বলেন, আট লাখ শরণার্থীর মধ্যে চার লাখ ৬০ হাজার শরণার্থীকে জার্মানি কাজে লাগাতে পারবে। দক্ষতার অভাবের কারণে তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, আবহাওয়া, সংস্কার কাজে শ্রমিকদের কাজে লাগানো যাচ্ছে না। আবার যেসব শরণার্থী প্রশিক্ষণ নিয়ে ভালো কাজ করছে, তাদের স্থায়িত্ব সম্পর্কে একধরনের শঙ্কা রয়েছে।
ইনস্টিটিউট ফর দ্য ফিউচার অব ওয়ার্কের গবেষণা বিভাগের উপপরিচালক উলফ রাইন বলেন, প্রশিক্ষণের পর শরণার্থীরা অন্য কোথাও চলে যেতে পারে। যারা দীর্ঘ বা মধ্য মেয়াদে কাজ করবে, তারা শ্রমবাজারকে গতিশীল করতে পারবে। রয়টার্স অবলম্বনে

শরণার্থী সমস্যা পশ্চিমাসৃষ্ট -ইনডিপেনডেন্টের বিশ্লেষণ

ইরাক ও সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের অবসানে পশ্চিমা বিশ্ব তেমন কিছুই করেনি। এ গৃহযুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্য থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় গণ-দেশত্যাগের ঘটনার সূত্রপাত করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের চলমান শরণার্থী সংকটের কারণও এটাই।
সিরিয়ার মোট দুই কোটি ৩০ লাখ মানুষের অর্ধেকের বেশি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এর মধ্যে ৪০ লাখ মানুষ দেশের বাইরে শরণার্থী হয়েছে। ইরাকেও ঘরবাড়িছাড়া লোকের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। দেশটির প্রায় ৩০ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাদের অনেকেই উপলব্ধি করতে শুরু করছে যে এই যুদ্ধ সহজে শেষ হচ্ছে না। এ কারণে তারা নিজের দেশে নিরাপদে বেঁচে থাকার আশা আর রাখছে না।
ইরাক ও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ সংকটকে ক্রমেই গভীরতর করছে। ইরাকের ভেতরে জঙ্গিদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর রণাঙ্গনে যে সমরসজ্জা, তা এখন সীমান্তে মোতায়েন সেনা ও অস্ত্রসরঞ্জামের তুলনায় অনেক গুণ বেশি। এ পরিস্থিতিতে দেশটিতে চলছে চরম অস্থিতিশীলতা। এ ছাড়া ইরাক ও সিরিয়ায় শিয়া মিলিশিয়া, কট্টর সুন্নি বাহিনী, বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠী একে অপরকে নির্মূল করতে লড়ছে। বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে প্রতিদিন হামলা চালিয়ে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে তুলছে কট্টর সুন্নি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। উগ্র শিয়ারাও প্রতিশোধ নিতে সীমা লঙ্ঘন করছে। তবে গৃহযুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রত্যেকটি সম্প্রদায়ই এতটা ভীতসন্ত্রস্ত যে সহায়-সম্পদ বেদখল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিয়েও পালিয়ে যাচ্ছে তারা। সিরিয়ার কুর্দি কর্তৃপক্ষ তাদের পুরো এলাকা জনশূন্য হওয়া নিয়ে চিন্তিত। কেননা কুর্দি বাসিন্দারাও ঘরবাড়ি ছেড়ে ইউরোপের পথে ছুটছে।
দৃশ্যত এক শতাব্দী আগের প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মতোই দীর্ঘ হচ্ছে ইরাক ও সিরিয়ার লড়াই। ২০১১ সালে পশ্চিমা শক্তি যেমন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স এবং এর আঞ্চলিক মিত্র সৌদি আরব, তুরস্ক ও কাতারের হিসাবে ব্যাপক ভুল হয়েছিল। তাদের ধারণা ছিল, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফির মতোই দ্রুত হবে।
সাম্প্রদায়িক সংঘাতে ইরাক ও সিরিয়া ছিন্নভিন্ন হলেও পশ্চিমা শক্তিগুলোর মধ্যে অদ্ভুত বিচ্ছিন্নতা দেখা যাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে কিছু করার তাগিদ অন্তত এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নে শরণার্থীদের অবিশ্রান্ত ঢলের কারণে পাশ্চাত্যের নির্লিপ্ত আচরণের পরিবর্তন হয়েছে—এটা বলারও সময় এখনো আসেনি।
পাকিস্তান ও নাইজেরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কমপক্ষে নয়টির বেশি আদিবাসী, উপজাতি বা বিচ্ছিন্নতাবাদী গৃহযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় চলছে বোকো হারামের সন্ত্রাসী তৎপরতা। আছে আফগান যুদ্ধ। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালেও এত বেশি দেশে গৃহযুদ্ধ দেখা যায়নি। কারণ, তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়ন জানত, এ ধরনের অস্থিরতা অন্য বিশ্বশক্তিকে সুযোগ এনে দেবে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর লিবিয়া বা ইরাকের মতো দেশগুলোর সমস্যায় পড়ার মধ্যে আর কোনো স্বার্থ দেখছে না পশ্চিমা শক্তিগুলো। এটাও লক্ষণীয় যে গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদনকারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও ওই দুটি দেশের সরকার পতনে তেলের দামেও তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। বিশ্বায়ন ও নব্য-উদার, মুক্তবাজার অর্থনীতির এই যুগে প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ হ্রাস পেয়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু থাকায় সরকার জনগণের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার প্রচেষ্টা এড়িয়ে যাওয়ার মতাদর্শগত ন্যায্যতা পেয়েছে। এখানে শক্তি ও সম্পদ একচেটিয়াভাবে ক্ষমতাসীন অভিজাতদের হাতে।
২০১১ সালের আগেও সিরিয়ার রাজধানীর দামেস্কের মধ্যাঞ্চল জীবনযাপনের জন্য বেশ ভালো জায়গা ছিল। সেখানে ছিল দারুণ সব রেস্তোরাঁ ও বিপণিবিতান। একই সময় উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় চলছিল বিপর্যয়কর খরা। কিন্তু সেখানকার জনসাধারণের জন্য সরকার কিছুই করেনি। ফলে ঘরবাড়ি ছেড়ে ওই এলাকার প্রায় ৩০ লাখ মানুষকে শহরের বস্তি এলাকায় আশ্রয় নিতে হয়। ওই স্থানগুলোই পরবর্তী সময়ে বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত হয়।
স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গত ২৫ বছরে বিশ্বায়ন ও মুক্তবাজার অর্থনীতিকে আধুনিক শক্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে বাস্তবতা হলো, জাতিরাষ্ট্র ও জাতীয়তার বোধ হ্রাসের পর এর স্থানে ভালো কিছু প্রতিস্থাপিত হয়নি। বরং আইএসের মতো মৌলবাদী শক্তিগুলোর জন্য দুয়ার খুলে গেছে।

আজ জরুরি বৈঠকে বসছেন ইইউ নেতারা

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা আজ বুধবার শরণার্থী সংকট নিয়ে একটি জরুরি সম্মেলন করবেন। এক লাখ ২০ হাজার শরণার্থীকে ভাগাভাগি করে নিতে একটি বিতর্কিত চুক্তিতে ইইউ মন্ত্রীরা সম্মত হওয়ার একদিন পর এ সম্মেলন হচ্ছে।
ইইউ’র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা গতকাল মঙ্গলবার ব্রাসেলসে চুক্তির ওপর ভোট দেন। এ চুক্তির আওতায় ইইউভুক্ত দেশগুলোকে অবশ্যই গ্রিস ও ইতালির মতো সম্মুখসারির দেশগুলোতে আসা শরণার্থীদেরকে কোটার ভিত্তিতে গ্রহণ করতে হবে।
গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে চুক্তিটি পাস হয়। তবে সর্বসম্মতিক্রমে এটা গৃহীত হয়নি। পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো থেকে ব্যাপক বিরোধিতা করা হয়েছে।
রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্র প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। রোমানিয়া ভোটদানে বিরত ছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম ইউরোপ বৃহত্তম শরণার্থী সঙ্কটের মুখে পড়েছে।
লুক্সেমবার্গের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জ্যাঁ অ্যাসেলবর্ন বলেন, বিরোধিতা সত্ত্বেও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কারণ এখন ‘জরুরি পরিস্থিতি’ বিরাজ করছে। বর্তমানে ইইউ’র সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে লুক্সেমবার্গ।
তিনি বলেন, ‘আমরা এটা না করলে ইউরোপ আরো বিভক্ত হয়ে যেত।’
ভোটাভুটির পর চেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিলান শোভানেক এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘সাধারণ বোধবুদ্ধি আজ হারিয়ে গেল। আমরা শিগগিরই টের পাব যে রাজাদের জন্য আর কোনো বস্ত্র নেই।’
আর স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো বলেন, প্রস্তাব গ্রহণ করার চেয়ে ইইউ’র আইন ভাঙার জন্য তিনি প্রস্তুত।
বুধবারের জরুরি সম্মেলনে ইইউ নেতারা শরণার্থীদের ভাগাভাগি করে নেয়ার পরিকল্পনা অনুমোদনের পাশাপাশি জোটের সীমান্তে আরো কড়াকড়ি আরোপ এবং তুরস্ক, জর্ডান, লেবানন ও জাতিসঙ্ঘের সংস্থাগুলোকে অতিরিক্ত তহবিল প্রদানের ওপর গুরুত্ব দেবেন।
তবে সামনে অনেক সমস্যাও রয়েছে। কারণ গ্রিস তার সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় বাইরের সাহায্য গ্রহণ করতে চাপের মুখে পড়তে পারে এবং এথেন্সে নতুন করে সার্বভৌমত্ব উদ্বেগ তৈরি হতে পারে।
ইউরোপ চলতি বছর হাজার হাজার শরনার্থীর ঢল সামলাচ্ছে। সিরিয়া, আফগানিস্তান ও ইরিত্রিয়ায় সংঘর্ষ ও দমনপীড়নের কারণে শরণার্থীদের অনেকে পালিয়ে ইউরোপ যাচ্ছে।

নামাজ নিয়ে কটাক্ষ করে বিচারের মুখোমুখি ফরাসী রাজনীতিক

মুসলমানদের প্রকাশ্যে নামাজ পড়াকে নাৎসি দখলদারিত্বের সঙ্গে তুলনা করে বিচারের সম্মুখীন হচ্ছেন মেরিন লি পেন নামে এক ফরাসি নারী রাজনীতিক। লি পেনের দল এবং দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর লিয়নের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার এ তথ্য জানান।
লিয়নের প্রসিকিউটর অফিস হতে বলা হয়, মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর বৈষম্য উস্কে দেয়ার অভিযোগে লি পেনকে বিচারের সম্মুখীন করা হচ্ছে। লি পেনের বিচারের জন্য অক্টোবরের ২০ তারিখ দিন ধার্য করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফরাসি নিউজ চ্যানেল ফ্রান্স২৪।
লি পেন আল্ট্রা-কনজারভেটিভ ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এফএন) পার্টির নেতৃত্বে রয়েছেন। এটি তার পিতা জাঁ-মারি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
২০১০ সালে একটি জনসভায় তিনি ওই মন্তব্য করেছিলেন। মসজিদ জনাকীর্ণ হওয়ার কারণে ফরাসি মুসলিমদের রাস্তায় নামাজ পড়তে বাধ্য করা হয় বলে তিনি তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন। তিনি তার বক্তৃতায় আরো বলেন, ‘আমরা যদি পেশার বিষয়ে কথা বলি, তাহলে আমরা রাস্তায় নামাজ সম্পর্কে বলতে পারি। কারণ এটি নিশ্চিতভাবেই একটি আঞ্চলিক পেশা।’ তিনি আরো বলেন, ‘কোন ট্যাংক নেই, কোন সৈন্য নেই, তথাপিও এটি একটি পেশা এবং এটি মানুষের উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।’
লি পেনের এই মন্তব্যের প্রাথমিক তদন্ত ২০১১ সালে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু পরের বছর দেশটির একটি মানবাধিকার গ্রুপের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আবার শুরু হয়। লি পেন এই বিচারকে একটি কলঙ্ক বলে অভিহিত করে এর নিন্দা জানান।

নাটোরে ১ মাসে শিক্ষকসহ অপহৃত ১০॥ নিখোঁজ ৩ by মোঃ শহীদুল হক সরকার

প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হককে এভাবেই শিকল দিয়ে
বেঁধে রাখে অপহরণকারীরা। পরে র‌্যাব তাকে উদ্ধার করে
নাটোরে গত এক মাসে ছাত্র-শিক্ষকসহ ১০টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে এক মাদরাসা ছাত্রকে মৃত ও ছয়জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে দুই মাদরাসা ছাত্র ও এক বাক প্রতিবন্ধী। এসব ঘটনায় নাটোরের সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
র‌্যাব, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ আগষ্ট থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক মাসে নাটোর জেলায় চার মাদরাসা ছাত্র, এক মাদরাসা ছাত্রী, এক প্রধান শিক্ষক, দুই ব্যবসায়ী, এক নারী ও এক বাক প্রতিবন্ধী নিমার্ণ শ্রমিকসহ ১০টি অপহরনের ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনার মধ্যে প্রধান শিক্ষককে র‌্যাব ও দুই ব্যবসায়ীকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। মাদরাসা ছাত্র আমিনুল হককে (১২) মুক্তিপণের টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা। নাটোর শহরের আলাইপুরের কওমী মাদরাসা ছাত্র তানভীর হোসেনের (১১) লাশ মাদরাসার পাশের সেপটিক ট্র্যাংকি থেকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। অপহৃত নারীকে গণধর্ষণের পর অপহরণকারীরাই ছেড়ে দেয়। এ ছাড়া বড়াইগ্রামের রাজাপুর কওমী মাদরাসার অপহৃত ছাত্র সাইফুল্লাহ (১২), নাটোর সদরের লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া কওমী মাদরাসার ছাত্র কাজল (১১) এবং নাটোর সদরের গৌরিপুর গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী নিমার্ণ শ্রমিক হায়দার আলী মোল্লা (৩৬) এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
অপহৃতদের পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ আগষ্ট নাটোর সদরের গৌরিপুর গ্রামের বাক প্রতিবন্ধী নিমার্ণ শ্রমিক হায়দার আলীকে জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুরে কাজের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুম করা হয়। এঘটনার তার স্ত্রী মিনা বেগম আব্দুস সালাম, রাজু ও আবু তাহের নামে তিনজনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগে মামলা করলেও কোনো অভিযুক্তকেই পুলিশ এখনো পর্যন্ত আটক করতে পারে নাই।
২৫ আগষ্ট পাশের আত্রাই পতিসর থেকে এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে নৌকায় অপহরণ করে নাটোরের সিংড়ায় এনে গণধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় বর্তমানে পাঁচজন জেল হাজতে রয়েছে। একই দিন নাটোর শহরের আলাইপুরের কওমী মাদরাসা ছাত্র তানভীর হোসেন (১১) নিখোঁজ হয়। ছয়দিন পর ৩১ আগষ্ট তার লাশ মাদরাসার পাশের সেপটিক ট্র্যাংকি থেকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। একই সময়ে র‌্যাব নিহতের তিন সহপাঠিকে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করেছে। আটককৃত তিন কিশোর ইতোমধ্যে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে বলেছে, ভারতীয় টিভি চ্যানেলে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা দেখেই তারা সহপাটিকে অপহরণ করে তার বাবার কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণ নেয়ার চেষ্টা করেছিল।
২৮ আগষ্ট নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ক্ষিদ্র মালঞ্চি গ্রামের আতাহার আলীর বাড়ি থেকে মারজানা (৯) নামে ঢাকা রায়ের বাজারের কদমতলি এলাকার তালিম উদ্দিন মহিলা মাদরাসার অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ অপহরণকারী চক্রের সদস্য আতাহার আলীর আত্মীয় আব্দুল মালেককে আটক করেছে। এর দুদিন আগে মাদরাসার পাশ থেকে সে অপহৃত হয়েছিল।
৩ সেপ্টেম্বর নাটোর সদরের লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া কওমী মাদরাসার ছাত্র কাজল (১১) বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরের মাদরাসায় যাওয়ার সময় অপহরণ হয়। ভ্যান চালক বাবা দেলোয়ার হোসেন মুক্তিপণের টাকা দিতে না পারায় আজো তার ছেলে মুক্তি পায়নি।
৫ সেপ্টেম্বর সকালে বাড়ি থেকে মাদরাসায় যাওয়ার পথে অপহরণ হয় বড়াইগ্রামের রাজাপুর কওমী মাদরাসার অপহৃত ছাত্র আমিনুল হক (১২) ও সাইফুল্লাহ (১২)। পরের দিন বিকাশে চাহিদা মতো মুক্তিপণের টাকা দেয়ার পর অপহরণকারীরা একটি চলন্ত মাইক্রোবাস থেকে আমিনুল হককে স্থানীয় মুলাডুলি বাজারের পাশে নামিয়ে দিলেও আজ পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি অপর মাদরাসা ছাত্র সাইফুল্লাহ।
৯ সেপ্টেম্বর অপহরণেরর ১১দিন পর নাটোরের সিংড়া উপজেলার বিলাঞ্চলের আধঘোলা গ্রাম থেকে শিকল দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অপহরণকারীদের দূর্গম এলাকার একটি ঘর থেকে র‌্যাব উদ্ধার করে অপহৃত রাজশাহী বাঘার ছাতারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হককে (৫৫)। পাওনা টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে মোবাইলে নাটোরে ডেকে নিয়ে তাকে অপহরণ করা হয়। র‌্যাব এ ঘটনায় মুল পরিকল্পনাকারীসহ চারজনকে আটক করেছে।
১৬ সেপ্টেম্বর নাটোর শহরের মীরপাড়ার আব্দুল গফুরের ছেলে ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন (৩৫) ও ভবানীপুর গ্রামের প্রাণ মোহাম্মদের ছেলে মাসুদ পারভেজ (৩৭) অপহৃত হন। দুই লাখ টাকা মুক্তিপন দাবির পর বিকাশে প্রথমে ৬০ হাজার টাকা দেয় অপহৃতদের পরিবার। পরের দিন মোবাইল ট্র্যাকিং করে সকালে পুলিশ পাবনার চাটমোহর থেকে দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার ও চার অপহরণকারীকে আটক করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী নয়া দিগন্তের এই প্রতিবেদকে বলেছেন, প্রতিটিই বিচ্ছিন্ন ঘটনা, তারপরও পুলিশ সব ঘটনাই আন্তরিকতার সাথে তদন্ত করে নিখোঁজ মানুষদের উদ্ধারের চেষ্টা করেছে। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ উদ্ধারও হয়েছে। যে তিনজন এখনো উদ্ধার হয়নি তাদের উদ্ধারে পুলিশ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্বে সাত লাখের বেশি নারী ও শিশু কারাগারে

সারা পৃথিবীর কারাগারগুলোয় এখন সাত লাখের বেশি নারী ও শিশু রয়েছে বলে একটি গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে। ২১৯ টি দেশের উপর করা ওই গবেষণা বলছে, ২০০০ সালের পর বিশ্বে কারাগারে নারী ও শিশুদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এই সংখ্যার অর্ধেকই রয়েছে শুধুমাত্র তিনটি দেশে, যুক্তরাষ্ট্র, চীন আর রাশিয়ায়। লন্ডনের বার্কবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট ফর ক্রিমিনাল পলিসি রিসার্চের করা এই গবেষণা বলছে পুরুষ কারাবন্দীদের সংখ্যা বৃদ্ধির হারের চেয়ে নারীদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। গবেষক ড. জেসিকা জ্যাকবসন বলেছেন, নারী আর শিশুরা অনেক ক্ষেত্রেই এসব সমাজের সবচেয়ে দুর্বল অংশ, আর এ কারণেই তারা সহজেই অপরাধ আর শোষণের শিকার হচ্ছে। এই গবেষণা দেশগুলোর সরকারের এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে কাজে আসবে বলে তিনি মনে করেন। বিশেষ করে এল সালভাদোর, ব্রাজিল, কম্বোডিয়া ও ইন্দোনেশিয়াতে এর হার বেশি। তবে আফ্রিকান দেশগুলোর কারাগারে নারীদের সংখ্যা সবচেয়ে কম। সংখ্যাটি আরো বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে কারণ সাতটি দেশ এ সম্পর্কিত কোন তথ্য দেয়নি।– বিবিসি

জ্যান্ত মানুষ চাপা দিয়ে বানানো হলো নতুন রাস্তা

জলজ্যান্ত মানুষের উপর গরম পিচের প্রলেপ দিয়ে, রাস্তা হয়ে গেল! অথচ, রাস্তা তৈরির সময় একজনও কারও নজরে পড়ল না! কী করে ঘটে গেল এমন নজিরবিহীন ঘটনা, তা এখনও পরিষ্কার নয়। কিন্তু, বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, পা পিছলে একটি বড় গর্তে পড়ে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। রাস্তা তৈরির সময় কেউ তা খেয়ালই করেননি। নুড়ি-খোওয়া দিয়ে সেই গর্ত বোজানোর সময়, তাকেও জীবন্ত চাপা দেওয়া হয়। তার ওপর পিচের প্রলেপ দিয়ে রাস্তাও হয়ে যায়। পুলিশ জানায়, বছর ৪৫-এর ওই ব্যক্তির নাম লাটোরি লাল। পিচের আড়াল থেকে জামা দেখে গ্রামের মানুষের সন্দেহ হয়। তার পর দেখা যায়, এক ব্যক্তি সেখানে চাপা পড়ে আছে। পুলিশের ধারণা, লাটোরি মদ্যপ অবস্থায় থাকার কারণেই টাল সামলাতে না-পেরে, গর্তে পড়ে যায়। প্রশ্ন উঠেছে, এক ব্যক্তি পড়ে যাওয়ার পর, তার উপর পিচের প্রলেপ দিয়ে, রোলারও চালিয়ে দেওয়া হলো, অথচ কারও নজরে পড়ল না কেন? পুলিশের কাছে ব্যাপারটা অস্বাভাবিকই। সবরকম সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে রাস্তা খুঁড়ে দেহটি বার করা হয়। এলাকার লোকজন নির্মাণ শ্রমিকদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশ জানতে পারে, লাটোরি লাল এবং তার স্ত্রী একসঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। দুজনের মনোমালিন্য হওয়ায়, স্ত্রীকে ফেলেই হাঁটা দেন লাটোরি। ঘণ্টাখানেক পরে স্ত্রী বাড়িতে ফিরে দেখেন, দরজায় তালা ঝুলছে। লাটোরি তখনও ফেরেননি। এরপর টর্চ নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে স্বামীকে খুঁজতে বেরোন। তখনও রাস্তায় পিচ-চাপা অবস্থায় দেখতে পান স্বামীর শার্ট। পুলিশ রোলার চালক ও এক নির্মাণ শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে। মৃতের স্ত্রীকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।- ওয়েবসাইট

ইউরোপে অভিবাসী সংকট: কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

ইউরোপে আসা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার অভিবাসীদের স্থানান্তর করার যে প্রস্তাব ইইউ-র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা অনুমোদন করেছে, তাতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মধ্য ইউরোপের দেশগুলো। ওই পরিকল্পনায় ইটালি, গ্রিস এবং হাঙ্গেরি থেকে অভিবাসীদের ইইউভুক্ত অন্যান্য দেশে স্থানান্তর করার কথা রয়েছে।   সম্প্রতি হাঙ্গেরিতে অভিবাসীদের সাথে পুলিশের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে ইউরোপিয় ইউনিয়নের অধিকাংশ সদস্য দেশ অভিবাসীদের স্থানান্তরের পরিকল্পনার পক্ষে ভোট দিলেও চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া এবং স্লোভাকিয়া ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। ভোটদানের পর স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো বলেন, তিনি কোন ধরণের বাধ্যতামূলক কোটা বাস্তবায়ন করবেন না। তবে হাঙ্গেরি বলেছে, তারা ইইউ-এর সিদ্ধান্তে অখুশি হলেও, এই সিদ্ধান্ত তারা মেনে নেবে। ইইউ-র সিদ্ধান্তকে ভুল উল্লেখ করে চেক প্রেসিডেন্ট মিলোস জেমানও মন্তব্য করেন যে ভবিষ্যতে সবাই এটি বুঝতে পারবে। বিবিসির ইউরোপ সংবাদদাতা ক্রিস মরিস বলছেন, জাতীয় সার্বভৌমত্ব জড়িত এমন একটি বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত না নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়াটা খুবই অস্বাভাবিক। ইইউ পরিকল্পনার আওতায় অভিবাসীদের গ্রহণ করাটা স্বেচ্ছার ভিত্তিতে উল্লেখ করা হলেও দেশগুলোর এ বিষয়ে খুব বেশি সুযোগ দেয়া হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ইইউ আইনের অনুযায়ী কোন দেশ যদি অভিবাসন বিষয়ে কোন নীতি পালনে অসম্মত হয় তবে তারা ইউরোপিয় কাউন্সিলে এনিয়ে আবেদন জানানোর অধিকার রাখে। আগামী বুধবার ইউরোপিয় ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের বৈঠকে পরিকল্পনাটি অনুসমর্থনের জন্য উত্থাপন করা হবে। এদিকে বৃটেন বলছে, আগামী পাঁচ বছরে তারা যে ২০ হাজার সিরিয় শরণার্থীকে স্থান দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তাদের প্রথম দলটি দেশটিতে এসে পৌঁছেছে।– বিবিসি

পানিতে ডুবিয়ে যেভাবে হত্যা করা হয় দুই কলেজ ছাত্রকে by রাশিম মোল্লা

হত্যার এ এক নিষ্ঠুর পদ্ধতি। শিকার দুই কলেজছাত্র। সময়ের ব্যবধান দুই সপ্তাহ। কিন্তু পদ্ধতি একই। অপহরণের পর নিয়ে যাওয়া হয় নদীতে । হাত, কোমর, বুক দড়ি আর গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। এরপর শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেয়া হয় রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপের পাথর। পরিবারের সদস্যদের শোনানোর জন্য রেকর্ড করা হয় মুক্তিপণের কথা। কিন্তু জীবিত রাখা হয় না তাদেরকে। ডুবিয়ে দেয়া হয় মাঝ নদীতে।
কলেজছাত্র মনির হোসেন ও মুনসের আলী মুন্না হত্যার এ ভয়ঙ্কর বিবরণ দিয়েছে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আনোয়ার হোসেন এবং লাল মিয়া। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে তারা বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে দুটি হত্যাকাণ্ডের। যে জবানবন্দিতে ওঠে এসেছে হত্যাকাণ্ডের প্রধান হোতা হিসেবে বাদশার নাম।
কলেজছাত্র মনির হোসেন ও মুন্না। মনির পড়তো মানিকগঞ্জ খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন কলেজে একাদশ শ্রেণীতে। সে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের কুয়েত প্রবাসী পরশ আলীর ছেলে। মানিকগঞ্জ শহরের সেওতা এলাকার একটি মেসে থাকতো। অন্যদিকে, মুন্না পড়তো সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের আবদুল মান্নানের  ছেলে। সে তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে সাভার পৌর এলাকার আড়াপাড়া মহল্লায় থাকতো। চিত্রশিল্পীর কাজ করে পড়ালেখা করওতা মুনসের আলী মুন্না। মুন্নাকে অপহরণ করা হয় গত ২৫শে আগস্ট। এর দুই সপ্তাহ পর অপহরণ করা হয় মনিরকে। দুটি ক্ষেত্রেই পরিবারের কাছে দাবি করা হয় বড় অঙ্কের মুক্তিপণ। পুলিশ এ অপহরণকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। মনিরের লাশ উদ্ধার হলেও মুন্নার লাশ এখনও উদ্ধার হয়নি।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি: সূত্র জানায়, জবানবন্দির শুরুতে আনোয়ার হোসেন তার সঙ্গে এ ঘটনার মূল হোতা বাদশার কিভাবে যোগাযোগ গড়ে ওঠে তার বর্ণনা দেয়। এরপর জবানবন্দিতে সে বলে, ২৫/৮/১৫ তারিখ রাত ৮টার দিকে বাদশা আমাকে ফোন করে সাভার নামাবাজার যেতে বলে। এরপর আমি ভ্যান চালিয়ে এসে একা একা রাত ৮টার পরে সাভার নামাবাজার খেয়াঘাট এলাকায় যাই। সেখানে গিয়ে বাদশা, আজগর, লাল মিয়াসহ অনেককে দেখি। তারপর বাদশার কথামতো আমি, আজগর, লাল মিয়া এবং বাদশা মিলে নদীতে নৌকায় উঠি এবং নৌকায় আরও কয়েকজন লোক ছিল। তারপর নদীর ওপারে গিয়ে আমি, বাদশা, লাল মিয়া, আজগর এবং অপর দুই জন ব্যতীত বাকি লোক নৌকা থেকে নেমে যায়। তারপর নৌকা নিয়ে আবার নদী দিয়ে সিংগাইর ব্রিজের দিকে কিছুদূর গেলে বাদশা সবাইকে বলে নৌকায় থাকা মুন্নাকে জিম্মি করে টাকা নিতে হবে। মুন্না নৌকার মধ্যে ছিল এবং মুন্নাকে বাদশাসহ অন্যরা নিয়ে গিয়েছিল। মাঝির নাম লাল মিঞা এবং সে নৌকার মালিক। নদী দিয়ে চলতে চলতে নদীর মাঝে গিয়ে বাদশা মুন্নাকে চড় মারে এবং আমাকে মুন্নাকে ধরতে বলে। বাদশার কথামতো আমি, আজগর মুন্নাকে ধরে রাখি। বাদশা, মাঝি লাল মিয়া এবং অপরিচিত দুজন মুন্নার মুখ গামছা দিয়ে বাঁধে এবং হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং মুন্নার মোবাইল ছিনিয়ে নেয় বাদশা। মুন্নার বাড়ির মোবাইল নম্বর নিয়ে বাদশা মুন্নার বাড়িতে কথা বলে এবং ৩০০০০০ টাকা মুক্তিপণ দিতে বলে। তখন রাত ৯টা বাজে। মুন্নার কথাগুলো বাদশা রেকর্ড করে রাখে। নৌকার মধ্যে পাথর-দড়ি এগুলো বাদশা ও লাল মিঞা তুলে রাখে। বাদশা ও লাল মিয়া এবং অন্য দুইজন দড়ি দিয়ে মুন্নার পা, মাজা, বুক ও হাত বাঁধে এবং পূর্বেই গামছা দিয়ে মুখ বাঁধা ছিল। আমি ও আজগর তাদের নিষেধ করি। কিন্তু তারা মানেনি। এবং সকলেই মিলে হাত-পা-মুখ-মাজা বাঁধা অবস্থায় সাড়ে ৯টার দিকে (অনুমান) সিংগাইর ব্রিজের আগে তাকে নৌকা থেকে নদীর মধ্যে ফেলে দেই। এরপর যে যার মতো বাড়িতে চলে যাই। এর দুই সপ্তাহ পর একই কায়দায় এই চক্র খুন করে মনিরকে।
জবানবন্দিতে আনোয়ার বলে, মুন্নার মতো করে একই কায়দায় নদীর মাঝখানে গিয়ে সকলে মিলে মনিরের হাত-মুখ-পা ও মাজা দড়ি দিয়ে বাঁধা হয় এবং রানা প্লাজার পাথর দিয়ে দড়ির সঙ্গে বেঁধে মনিরকে নদীর মাঝে ফেলে দেয়া হয়। নদীর মাঝখানে বাদশাসহ অন্যরা মনিরকে মারধর করে মোবাইল কেড়ে নেয় এবং মনিরের মা-চাচার সঙ্গে কথা বলায়। ওই সময় মনির বাদশাকে বলে মেরে ফেলো না ৪০০০০০০ টাকা লাগলেও দিব। তারপর বাদশা মনিরের মোবাইল দিয়ে তার মায়ের নিকট ২০০০০০০ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং মোবাইলে কথা রেকর্ড করে। তারপর চালক লাল মিয়া, বাদশা, আজগর অন্য দুইজন রানা প্লাজার ভাঙাপাথর দিয়ে বেঁধে সিংগাইর ব্রিজের কিছু আগে ফেলে দেই। তারপর আমরা যে যার মতো চলে যাই। মুন্না ও মনিরকে আমরা একইভাবে, একই নৌকায়, একই লোকজন মিলে দড়ি ও গামছা দিয়ে বেঁধে নদীতে ফেলে হত্যা করি। আমি আমার অপরাধের জন্য অনুতপ্ত। এটাই আমার জবানবন্দি।
লাল মিয়া জবানবন্দিতে বলে, গত ২৫শে আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার সময় বাদশা আমাকে ফোন করে জানায়, তারা ৪-৫ জন মিলে আমার নৌকায় সাভার ঘাট থেকে সিংগাইর ব্রিজ পর্যন্ত ভ্রমণ করবে। ঘটনার তিনদিন আগে আজগর ও আনোয়ার খেয়াঘাটে বেলা ১টার দিকে আমার সঙ্গে দেখা করে বলে ২৫শে আগস্ট বিকাল বেলা আমার নৌকায় ভ্রমণ করবে এবং ১৪০০ টাকা ভাড়া  দেবে। কথামত ২৫শে আগস্ট বাদশা, আজগর, আনোয়ার ও ভিকটিম মুন্নাকে ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭টায় সাল্লাঘাটে নিয়ে আসে। আমার ইঞ্জিনচালিত নৌকায় তারা বসে। আর আমি একাই ট্রলার চালাচ্ছিলাম। তাদের কথামতো সাভার সাল্লাঘাট থেকে সিংগাইর ব্রিজের দিকে যাত্রা শুরু করি। ট্রলার চলার আধ ঘণ্টা পর আজগর ও আনোয়ার আমাকে কাছাকাছি থাকতে বলে। এরপর বাদশা ভিকটিম মুন্নার হাত বাঁধে, আজগর মুন্নার কোমর বাঁধে এবং বাদশা গামছা দিয়ে মুন্নার চোখ বাঁধে। বাদশা মুন্নার মোবাইল ফোন নিয়ে তার পরিবারের কাছে চাঁদা দাবি করে। এক পর্যায়ে মুন্নার কোমরে পাথর বেঁধে তাকে নদীতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। একইভাবে ভিকটিম মনিরকে নিয়ে সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ দিকে বাদশা, আজগর, আনোয়ার বালুঘাট আসে। তারা চারজন আমার নৌকায় বসে। পনের মিনিট পর ওরা মনিরকে কিল ঘুষি মারে। এরপর বাদশা মনিরের চোখ বাধে গামছা দিয়ে। আজগর রশি দিয়ে মনিরের হাত বাধে। আনোয়ার রশি দিয়ে পা বাধে। এরপর মনিরের মার কাছে মুক্তি পনের জন্য ফোন দেয়। মনিরের মা মুক্তিপন দিতে রাজি হয়। এরপর রাত পোনে ১০ টার দিকে সিংগাইর ব্রিজের একটু উজানে ওরা তিনজন মনিরকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এভাবেই হত্যা করা হয় কলেজ ছাত্র মনিরকে।
পরিবারের বক্তব্য: মুন্না এবং মনিরের পরিবারের সদস্যরা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বর্বর এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেছেন। সরজমিন মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর ইউনিয়নের শিমুলিয়া এলাকায় নিহত মনির হোসেনের বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে, এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। কান্না থামছে না মনিরের পরিবারে। বারান্দার এক কোণে বসে  কাঁদছেন মনিরের মা মালেকা বেগম। আর মনিরের একমাত্র ছোট বোন ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী খাদিজা  ভাইয়ের জন্য কাঁদছে। ওকেও থামাতে পারছে না কেউ। মনিরের বাবা পরোশ আলী কুয়েত প্রবাসী। ছেলের মৃত্যুর খবরে  রোববার সে কুয়েত থেকে বাড়ি এসে ছেলের শোকে দিশাহারা হয়ে পড়েন। নিহত মনির হোসেনের মা মালেকা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ঘটনার দিন দুপুরে মনির মোবাইলে আমাকে বলে মা আমার  মেসের বুয়া থাকবে না। আমাকে রান্না করে কে খাওয়াবে। তাই আমি বিকালে বাড়ি চলে আসবো। কয়েক দিন বাড়ি থেকেই কলেজ করবো। এরপর আমি মাগরিবের নামাজ শেষ করে ছেলের মোবাইলে ফোন করতে থাকি। কিন্তু মনির আমার ফোনটি রিসিভ করছিল না। পরে রাতে মনিরের নাম্বার থেকে একটি লোক  ফোন করে আমাকে গালি দিয়ে বলে, তোর ছেলেকে যদি জীবিত দেখতে চাস তাহলে এখনই ২০ লাখ টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দে। ফোনে আমি ছেলের প্রাণ ভিক্ষা চাইলাম কিন্তু ওদের দয়া হলো না। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, আমার মনিরের স্বপ্ন ছিল সেনাবাহিনীর চাকরি করবে। আমার সব স্বপ্ন ঘাতকরা শেষ করে দিয়েছে। গ্রাম থেকে শহরে কলেজ করতে কষ্ট হবে ভেবে আমি মনিরকে মেসে রেখে লেখাপড়া করাচ্ছিলাম। নিহত মনিরের একমাত্র ছোট বোন ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী খাদিজা ভাইয়ের জন্য হাউমাউ করে কাঁদছে। ছোট্ট খাদিজাকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা কারো নেই। খাদিজা বলেন, আমার ভাই যেদিন ছুটি শেষে বাড়ি থেকে শহরে যায় সেদিন আমাকে বলে যায়, ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া ও লেখাপড়া করো। আমি চলে যাচ্ছি। যাওয়ার আগে হাট থেকে আমার জন্য একটি আখ নিয়ে আসে। এ কথা বলতেই কান্না আরও বেড়ে যায় ছোট বোন খাদিজার।
পুলিশের বক্তব্য: পুলিশ জানায়, মনির হোসেন ও মুন্না অপহরণের ঘটনায় একই বিকাশ নম্বর থেকে টাকা নেয়া হয়। পরে তাদের পরিবার পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সাভার, ধামরাই ও মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করতে সক্ষম হয়। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সাভার, ধামরাই ও মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। মনসুরের ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার থেকে সাভার পুলিশ অপহরণচক্র  গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। প্রথমে বাদশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার দেয়া তথ্যে বাকি ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। আটকের পর সাভার থানা শুক্রবার আয়োজন করে একটি সংবাদ সম্মেলন। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আজিম বলেন, প্রযুক্তির সহায়তায় সাভারের আড়াপাড়া থেকে প্রথমে বাদশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাকি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপহরণের বিস্তারিত খুলে বলে।