পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আর্ন্তজাতিক কমিশনের (সিএইচটি) গাড়িবহরে হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটির নেতারা।
>>সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কমিশনের কো-চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল-সমকাল
শনিবার
সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন,
'কেন গাড়ি বহরে হামলা করা হয়েছে তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। কারা হামলা
করেছে সে ব্যাপারেও আমরা নিশ্চিত নই। বিষয়টি আমরা পুলিশকে অবহিত করবো। আমরা
চাই দ্রুত দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা হোক।'
শনিবার বিকেলে রাঙ্গামাটিতে হামলার শিকার হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশন (সিএইচটি)।
এ
হামলায় রাঙ্গামাটি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনু সোহেল
ইমতিয়াজ ও ইলোরা দেওয়ান নামে প্রতিনিধি দলের এক সদস্য আহত হন। এ কারণে
পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর বাতিল করে চট্টগ্রাম ফিরে এসে সন্ধ্যায় প্রেসক্লাবে
সংবাদ সম্মেলন করে।
কমিশনের কো-চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বলেন,
'হামলা করে কেউ আমাদের প্রতিহত করতে পারবে না। সশস্ত্র সন্ত্রাসী,
জঙ্গীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমরা যেভাবে সতর্ক থাকি, ভবিষ্যতে একইভাবে সাবধান
থাকবো। কিন্তু আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাবো।'
হামলার বর্ণনা দিয়ে
তিনি জানান, সমঅধিকার আন্দোলন নামে একটি সংগঠনের নেত্রী নূরজাহান তাদের ওপর
হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। নূরজাহান শুরু থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রাম
আর্ন্তজাতিক কমিশনের সদস্যদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলে লোকজন
জড়ো করেন। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে হামলা শুরু হয়।
কেন, কি
উদ্দেশ্যে তাদের ওপর হামলা হয়েছে?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে
আমাদের কোনো ধারণা নেই। যারা আমাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল তারাই
বিষয়টি বলতে পারবে।'
পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল
পর্যবেক্ষণের জন্য বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি এই তিন পার্বত্য জেলা
সফরের অংশ হিসেবে কমিশনের কো-চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল, সদস্য স্বপন
আদনান, খুশী কবীর, অ্যাডভোকেট সারা হোসেন, হানা শামস ও সিপিডির নির্বাহী
পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানসহ ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ৫ জুলাই থেকে ৮
জুলাই বান্দরবান জেলার বিভিন্ন এলাকায় মতবিনিময় করার কথা ছিল।
এরই
অংশ হিসেবে তারা শনিবার রাঙামাটি যায়। কিন্তু আগে থেকেই কমিশনের এ সফরকে
প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য নাগরিক
পরিষদসহ ছয়টি বাঙালি সংগঠন। তারা সফরকালে সড়ক ও নৌ পথ অবরোধের ঘোষণা দেয়। এ
নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তারপরও শনিবার কমিশনের
সদস্যরা রাঙামাটি পৌঁছলে তাদের গাড়িবহরে হামলা করা হয়। এরপর কমিশনের
সদস্যরা পুলিশের নিরাপত্তায় চট্টগ্রাম ফিরে আসে।
এদিকে শনিবার
সন্ধ্যা ৬টায় পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ, পার্বত্য নাগরিক পরিষদসহ বাঙালি
সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা বান্দরবানের কে›ন্দ্রীয় জামে মসজিদ এলাকায় এক
সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে সড়ক ও নৌপথের অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।
পার্বত্য
বাঙালি ছাত্র পরিষদের বান্দরবান জেলা সভাপতি আবদুল কাইয়ুম অবরোধ
প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'পার্বত্য অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক
সম্প্রীতির বিরুদ্ধে উস্কানিদাতা তথাকথিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক
আন্তর্জাতিক কমিশনের (সিএইচটি) সদস্যদের বান্দরবান সফর বাতিল করায় আপাতত
অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তাদের সফর প্রতিহত করতেই আমরা অবরোধের
ডাক দিয়েছিলাম।'
Comments[ 0 ]
Post a Comment