একসময়ে বাতিঘরের জন্য বিখ্যাত কুতুবদিয়া
দ্বীপ, পূর্বদিকে আঁকাবাঁকা নদী সারি সারি প্যারাবন। উত্তরে একমাত্র
খরস্রোতা নদী- কর্ণফুলী, পশ্চিমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সমুদ্র
সৈকত, শামুক ঝিনুক, এবং ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাকড়া। দক্ষিণে সীমানাহীন লবণের
মাঠ, উত্তর-পশ্চিম, পূর্ব দক্ষিণ যে দিকেই তাকাই মাঝি মাল্লার দেখা মিলে,
চারিদিকে বঙ্গোপসাগরে ঘেরা ২১৫ বর্গ কিলোমিটারের এই দ্বীপটি প্রাকৃতিক খনিজ
সম্পদে ভরপুর। শাহ আব্দুল মালেক কুতুব আউলিয়ার পূণ্যভূমি, পর্যটন সমৃদ্ধ
এলাকা, ক’দিন আগের কথা, গ্রাম বাংলার চিরচেনা সব ঐতিহ্য বিরাজমান ছিল।
কুতুবদিয়াবাসীর ছিল গোলাভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ, গোয়াল ভর্তি গরু, মহিষ,
ছাগল, মাঠে ঘাটে সোনালী ফসল, নদী খালে সোনালী রুপালী নানা প্রজাতির মাছ।
কিন্তু এসব আজ হারিয়ে যাচ্ছে আগ্রাসণী সমুদ্রের কবলে। শিক্ষা, সংস্কৃতি,
ঐতিহ্য কোন অংশে পিছিয়ে নেই এই এলাকা। শিক্ষার হার বিবেচনায় কক্সবাজার
জেলায় শীর্ষে অবস্থান। এই ছোট্ট জনপদের লোকজন মানব সম্পদে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের সচিবালয় থেকে শুরু করে নানা পদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে
আসছেন এই এলাকার কৃতি সন্তানেরা।
ZoooooMএই
অঞ্চলের লোকজন পেশায় সামুদ্রিক মাছ আহরণ ও লবণ চাষাবাদে জড়িত। কিন্তু
প্রাকৃতিক প্রতিকুলতা, মানবসৃষ্ট ধুম্রজালে তালবেতাল হয়ে পড়েছে। এই এলাকার
জনজীবন, হারিয়ে ফেলেছে জীবনযাত্রার ছন্দ। মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর আগেই
প্রকৃতি তাদের জীবনযাত্রার অগ্রগতিকে থামিয়ে দেয়। হাজারো স্বপ্ন নিয়ে
প্রতিকুলতার মাঝে সমুদ্র উপকন্ঠে বসবাস করে আসছে লাখো জনতা। শিক্ষা,
সংস্কৃতি ঐতিহ্য নিয়ে অগ্রসর হতে চাইলেও বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে
প্রতিনিয়ত, বর্ষা এলেই আতংক বিরাজ করে দ্বীপবাসীর মাঝে, প্রাকৃতিক
দুর্যোগ, নদী ভাঙ্গন, জলোচ্ছ্বাস লন্ডভন্ড করে দেয় তাদের স্বাভাবিক
জীবনযাত্রা। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী জলবায়ু বিপদাপন্ন দেশ হিসেবে স্বীকৃত যা
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রকট হচ্ছে। বিশেষ করে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে
দেশটিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয় বেশি।
ঐসব দুর্যোগের
কারণে সহায় সম্পত্তি, বসতবাড়ি জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হতে হচ্ছে সহস্র
মানুষকে। জলবায়ুবিদগণ ভবিষ্যৎ বাণী করে বলেন- একবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি
সময়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনে
বাংলাদেশের ভূমিকা নগন্য হলেও বৈশ্বিক উষ্ণতায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ
প্রভাবের ফলে এ দেশের দক্ষিণাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তার মাঝে
কুতুবদিয়া অন্যতম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে,
অনাবৃষ্টি, বন্যা, খরা, অতিবৃষ্টি, ঋতুবৈচিত্র পাল্টে যাবে। সামুদ্রিক
জলোচ্ছ্বাস, মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা এবং ক্ষতির পরিমাণ
বাড়বে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে হাজার হাজার মানুষ এবং প্রভাব পড়বে মানুষের জীবন
জীবিকার উপর।
জার্মান ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বাংলাদেশের উপর
প্রভাবও ক্ষয়ক্ষতির যে আশংকার কথা বলা হয়েছে তা হলে বাংলাদেশের বন্যা এলাকা
বাড়বে ২৯ শতাংশ তার মধ্যে কুতুবদিয়া শীর্ষে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
ইতোমধ্যে দ্বীপবাসীর মাঝে চরমভাবে লক্ষণীয়, প্রতিনিয়ত পানির স্বাভাবিক
উচ্চতা বাড়ছে। নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে ভাসছে। যার ফলে উদ্বাস্তু মানুষের
সংখ্যা বাড়ছে, ভাসমান পরিবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ এক বিভীষিকাময় জীবন, নিয়তীর
কাছে হার মানতে হচ্ছে দ্বীপবাসীর। একবার ঘূর্ণিঝড়ে সব হারায় আবার নদী
ভাঙ্গনে বিলুপ্ত করে তাদের অস্তিত্বকে, তবুও মারায় টানে ঠাঁই নেয় আগ্রাসনী
সমুদ্রের তীর।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে জলবায়ু উদ্বাস্তু মানুষের
পুনর্বাসনে আর্থিক ফান্ড আছে, ব্যয়ও হচ্ছে কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তরা এই সুবিধার
আওতায় পড়ছে না। এছাড়া জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষের জন্য কার্যকর
প্রত্যাবর্তন, স্থানান্তর ও পুনবার্সন কর্মসূচী চালু নেই। আন্তর্জাতিক
মানবাধিকার ও মানবিক আইনানুযায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান
কর্তব্য ও দায়িত্ব হচ্ছে জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষদের দেশের অভ্যন্তরে
স্থানান্তর ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
কুতুবদিয়া বাস্তুহারা মানুষের
সমস্যার শেষ নেই, অনেকেই বেড়ি বাধের উপর ব্যাঙের ছাতার মতো অস্থায়ী টঙ বেধে
জীবনযাপন করছে। আবার অনেকেই সুখের সংসার গড়তে অর্থকড়ি জমিয়ে পাকা অথবা
সেমিপাকা ঘরবাড়ি নির্মাণ করার সাহস পায়না। বিশেজ্ঞদের মতে, বর্তমানে ২০০৭
সালের সিডরের ন্যায় দুর্যোগ সৃষ্টি হলে ’৯১ এ ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে আরো বেশি
ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং দ্বিগুণ প্রাণহানি হওয়ার আশংকা রয়েছে।
১৯৯১ সালের
তান্ডবে উপকুলীয় এলাকায় প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এর
সিংহভাগ ছিল কুতুবদিয়া এবং তার আশ-পাশ এলাকার। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট এর
তথ্য অনুযায়ী ৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে কুতুবদিয়ার ৬টি ইউনিয়নে প্রাণহানি ঘটে ৯
হাজার ১৫ জনের। সরকারি তথ্য অনুযায়ী ১৫ হাজার ও বেসরকারি তথ্য অনুযায়ী ৪০
হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। দীর্ঘ ২৩ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও মানুষের
জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেনি। বর্তমানে কুতুবদিয়ার লোক সংখ্যা
রয়েছে প্রায় দুই লাখেরও কাছাকাছি। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে মাত্র
৭১টি। জনসংখ্যা অনুপাতে আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা অতি নগণ্য। নির্মাণ ত্র“টি
এবং অযতেœর কারণে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোকে ময়লা-আবর্জনার স্তুপে পরিণত হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে অনেক আশ্রয়কেন্দ্র স্থানীয় প্রভাবশালী লোকদের গুদামঘরে পরিণত
হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে কুতুবদিয়ার চার পার্শ্বের প্যারাবন, ঝাউবন
এখন উজাড় প্রায়। কুতুবদিয়া এখন জোয়ারের পানিতে ভাসছে। কুতুবদিয়াকে রক্ষা
করতে চাইলে অবশ্যই কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রবল সামুদ্রিক
জোয়ারের কারণে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে, সহস্রাধিক ঘর বাড়ি, ক্ষেত-খামার, বিশেষ
করে আলী আকবর ডেইলের তাবালের চর গ্রামটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই
এলাকায় রয়েছে দেশের একমাত্র বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প। বর্তমানে প্রকল্পটি
ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। আলী আকবর ইউনিয়নটি উপজেলার একমাত্র জনবহুল
ইউনিয়ন। এর দক্ষিণে ছিল খুদিয়ার টেক নামক একটা বিশাল ইউনিয়ন। আজ ইউনিয়নটি
বিলিন হয়ে গেছে। এবার আলী আকবর ডেইল বিলীন হওয়ার পালা। এছাড়াও ধুরুং আকবর
বলীর পাড়া, চর ধরুং, কৈয়ালবিল, কাইছারপাড়া, জালিয়া পাড়া ইত্যাদি গ্রামে
জোয়ার ভাটার পানি আনাগোনা অব্যাহত আছে।
প্রাকৃতিক নৈসর্গপূর্ণ এলাকা,
যেখানে- লবণ শিল্প, মৎস শিল্প, চিংড়ি ঘের প্রতিনিয়ত সফলতার হাতছানি দিচ্ছে।
আমাদের লবণ শিল্পে বিশ্বের দরবারে প্রশংসার দাবীদার। আরো আছেÑ সোনালী
রূপালী হাজার প্রজাতের কাঁচা মাছ, শুটকি, উন্নত প্রজাতির কাকড়া, দেশে
বিদেশে রপ্তানি হয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেই চলছে।
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এ দ্বীপবাসী বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে,
রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেক ক্ষেত্রে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই জনপদ।
কুতুবদিয়া
৬টি ইউনিয়নের প্রতিটি ইউনিয়ন মারাত্মক ভাবে ভাঙ্গনে আক্রান্ত হচ্ছে। দ্রুত
পদক্ষেপ না নিলে এই দ্বীপের অস্তিত্ব টিকে রাখা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে।
সাম্প্রতিক কুতুবদিয়া বাসির জীবন যাত্রার মান চরম ভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে।
টানা কয়েকদিনের পূর্ণিমায় জোয়ারের পানিতে ফুলে উঠেছে বঙ্গোপসাগর।
কুতুবদিয়ার চারপার্শ্বের এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। পূর্ণিমার জোয়ারের কারণে
ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ অপরিমেয়। কুতুবদিয়ার প্রায় ২৭টি গ্রাম আংশিক বা
পূর্ণাঙ্গভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের তাবালের চর
গ্রামটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যে কোন মুহুর্তে তলিয়ে যাওয়ার আংশকা রয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতি বছর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮
সেন্টিমিটার। যার ফলে বেড়ি বাধ ভেঙ্গে গিয়ে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়া, নদী
ভাঙ্গন বেড়ে যাওয়া নতুন কোন খবর নয় দ্বীপবাসীর কাছে।
এত দূর্যোগ থাকা
সত্ত্বেও কুতুবদিয়া বাসীকে প্রকৃতির সাথে সংগ্রাম করে নতুন করে বেঁচে থাকার
স্বপ্ন দেখতে হয়। প্রকৃতপক্ষে এসব দূর্যোগের জন্য স্থানীয় প্রভাবশালী
রাজনৈতিক ব্যক্তিরাই দায়ী। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী
রাজনৈতিক নেতারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে, সরকারের ছত্রছাঁয়ায় লবণমাঠ, চিংড়ি
ঘের ইত্যাদি নির্মাণের জন্য উপকুলীয় প্যারাবনের শত শত গাছ যেমন- বাইন,
কেউড়া, ঝাউবন ইত্যাদি রাতারাতি উজাড় করে দিয়েছে। অনেক স্থানীয় প্রতিনিধি
রক্ষক সেজে ভক্ষক হয়েছে, বেড়িবাধ উন্নয়নের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে
এখনও জনপ্রতিনিধির উচ্চাসন দখল করে আছেন।
প্রতি অর্থ বছরে সরকারের পক্ষ
থেকে যে বরাদ্দ দেয় হয় তার সুষ্ঠ ব্যবহার হয়না, বেড়িবাধ সহ অন্যান্য
উন্নয়নমূলক কাজে ঠিকাদারদের প্রভাবিত করে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজণৈতিক
ব্যক্তিগণ, তাদের কাজে ভাগ ভাটোয়ারা বসিয়ে হাত করে নেয় এমন অভিযোগ করেন
এলাকাবাসী। অনেক রাজণৈতিক নেতার প্রতিহিংসার কারণে কুতুবদিয়া আজ বিদ্যুৎহীন
অন্ধকারে ডুবে আছে তা কারো আজানা নয়। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন-
নেতারা গাড়ি বাড়ি করে শহরে নগরে পাড়ি জমিয়েছেন আমরা কিভাবে দিন কাটাচ্ছি তা
তাদের নিকট স্পষ্ট নয়, দু:খী মেহনতী মানুষের দু:খ দুদর্শা লাঘবে তাদের কোন
প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়না, নির্বাচন ঘনিয়ে আসলে হাত পা ধরে ভোট ভিক্ষা
করতে আসে, পরে আর কোন খোঁজ থাকে না।
চারিদিকে হাহাকার, দুর্বীসহ এক
কঠিন জীবনযাত্রা, মাথা গুজার ঠাই নেই অনেকের- তিন বেলা খাবার জুটেনা
অধিকাংশ লোকের, দিক বিদিক ছুটাছুটি করছে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার
জন্য। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে সরকারী, বেসরকারী উদ্যোগে
ত্রাণ বিতরণের কার্যক্রম ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা কাগজে কলমে থাকলেও তার
সত্যতা ও বাস্তবতা নেই। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম শুধু
শুনা যায়, বাস্তবে তার প্রমাণ খুবই বিরল।সাম্প্রতিক প্রকাশিত বেসরকারী
তথ্যানুযায়ী কুতুবদিয়া অধিকাংশ লোক মধ্যবিত্ত থেকে দারিদ্রের নিম্ন সীমায়
বসবাস করছে। ব্যক্তিগত পেশায় ভাটা নেমে এসেছে অনেকের। জেলে পরিবার অভাব
অনটনের মধ্যদিয়ে জীবন যাপন করছে। লবন ব্যবসায়ীরা ন্যায্য মূল্য না পেয়ে
বেকায়দায় পড়ে আছে, তাদের দাবী রাজনৈতিক বিবেচনায় তাদের ন্যায্যমূল্য থেকে
বঞ্চিত করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে দেখা গেছে সরকারী, বেসরকারী কোন সাহায্য
সহযোগিতা না থাকায় তাদের মাঝে বিরূপ প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। দেখা গেছে
প্রতি বছর শত শত একর জমি চাষাবাদ অনোপযোগী হয়ে পড়ছে, জেলেরা মাছ আহরণ
ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে উক্ত পেশা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে।
এই বিশাল জনগোষ্ঠিকে
টিকিয়ে রাখতে হলে, তাদের জন্য- অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা
নিশ্চিত করা সময়ের দাবী। সরকারী বেসরকারী এনজিও গুলোর তৎপরতা একান্তভাবে
কাম্য। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, মৎস্য এবং পানিসম্পদ
মন্ত্রণালয় এর পক্ষ থেকে নেয়া দরকার বিশেষ উন্নয়ন মূলক পরিকল্পনা এবং তার
সুষ্ঠ বাস্তবায়ন। প্রতিটি উন্নয়ন মূলক কাজের সুষ্ঠ তদারকি এবং জবাবদিতিহা
নিশ্চিত করা দরকার অন্যথায় খুব অচিরেই বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে ছোট্ট
দ্বীপটি হারিয়ে যাবে।
এখনিই সময় দ্বীপ বাসীর ন্যায্য দাবী সমূহ পূরণ করার তাদের দাবী সমূহের মধ্যে রয়েছে
কুতুবদিয়ার জলবায়ু স্থানচ্যুত সমস্যা অভ্যন্তরীণভাবে সমাধানে, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়কে দায়িত্ব নিতে হবে।
জলদস্যুদের তান্ডব মোকাবেলায় কোষ্ট গার্ডের তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে।
খাস জমি নিয়ে বিরোধ, দাঙ্গা হাঙ্গামা চিরতরে বন্ধ করতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত জেলে পরিবারকে সাহায্য সহযোগিতা করতে হবে।
বাস্তুহারা লোকদের পূনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
kutubi.jkkniu@gmail.com
Comments[ 0 ]
Post a Comment