ইসরায়েলের প্রায় একতরফা হামলায়
ফিলিস্তিন-শাসিত গাজা উপত্যকা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন মৃত্যুর
মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। সেখানকার বাতাসে বারুদের গন্ধ, চারদিকে শোকের মাতম। আর
ওপাশেই ইসরায়েলের একটি শহরে আনন্দ-ফুর্তির মধ্য দিয়ে বিয়ের একটি অনুষ্ঠান
হয়েছে।
এএফপির খবরে জানানো হয়, ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সেডেরত শহরের গত ১৬ মে বিয়ের ওই অনুষ্ঠানটি হয়।
শহরটির একটি ধর্মীয় স্কুলের ভেতরে সুরক্ষিত স্থানে ঘটা করে বিয়ে করেন জিভা মোরদেচাই ও হেইম জোহান।
>>গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এই মা তাঁর সন্তান হারিয়েছেন। তাঁর মতো আরও অনেকেই গত ১২ দিনে তাঁদের প্রিয়জন হারিয়েছেন। ছবি: রয়টার্স
বিয়েতে
আনন্দ-ফুর্তির কমতি ছিল না। কয়েক শ অতিথির উপস্থিতিতে ঐতিহ্য মেনে বিয়ের
আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। পরিবেশিত হয় ঐতিহ্যবাহী নৃত্য।
গাজায় ইসরায়েলি
হামলা আজ শনিবার দ্বাদশ দিনে গড়িয়েছে। আজ ভোরে খান ইউনিস শহরে একটি
মসজিদের বাইরে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে সাতজন নিহত হয়। এরপর গাজায়
আরও হামলা হয়। এতে চারজন নিহত হয়। আজকের ঘটনা নিয়ে গত ১২ দিনে গাজায় নিহতের
সংখ্যা ৩০৭ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছে দুই সহস্রাধিক ফিলিস্তিনি। হতাহত
ব্যক্তিদের অধিকাংশ বেসামরিক নাগরিক। তাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।
অপর দিকে চলমান সংঘাতে এ পর্যন্ত দুজন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কয়েকজন।
>>গাজা
যখন মৃত্যুপুরী, ইসরায়েলে তখন বসে বিয়ের আসর। ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয়
একটি শহরে গত ১৬ জুলাই বিয়ের একটি অনুষ্ঠান হয়। ছবি: এএফপি
নিজেকে
রক্ষার ব্যাপারে ইসরায়েলের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তবে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি এড়াতে সতর্ক
থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
যুদ্ধবিরতিতে উভয় পক্ষকে রাজি করাতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আজ ওই অঞ্চলে সফরে যাচ্ছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন।
গাজা
উপত্যকায় গতকাল আবার স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। যুদ্ধবিমান ও
সামরিক হেলিকপ্টারের সহায়তা নিয়ে স্থলবাহিনীর ওই অভিযানে গতকালও হতাহতের
ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ বাঁচাতে গাজার বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের
সন্ধানে ছুটছেন। এর আগে ১৩ জুলাই দিবাগত রাত থেকে প্রথম গাজায় স্থল অভিযান
শুরু করেছিল ইসরায়েলি নৌ কমান্ডোরা। এক দিন পরই ওই স্থল হামলা স্থগিত করা
হয়েছিল।
৮ জুলাই থেকে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলার
সূত্রপাত ইসরায়েলি তিন কিশোরকে সম্প্রতি অপহরণ ও হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র
করে। হামাসই ওই ঘটনা ঘটায় বলে মনে করে ইসরায়েল। তবে হামাস তা অস্বীকার করে।
পরে ফিলিস্তিনি এক কিশোরকে একইভাবে হত্যা ও অপহরণের পর উত্তেজনা নতুন
মাত্রা পায়। এরপর গাজা থেকে রকেট ছোড়া হচ্ছে—এমন দাবি তুলে ‘অপারেশন
প্রটেক্টিভ এজ’ শুরু করে ইসরায়েল।
Comments[ 0 ]
Post a Comment