সংবাদ পত্রে ধারাবাহিক সচিত্র প্রতিবেদন
প্রকাশের পর বর্ষার শেষ পর্যায়ে কুতুবদিয়ায় বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশের
রিঙবাঁধ নির্মাণের জন্য অবশেষে ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে পানি উন্নয়ন
বোর্ড (পাউবো)। চর ধূরুং ও কাইছার পাড়া এলাকার দু’টি পয়েন্ট দিয়ে নিয়মিত
জোয়ার-ভাটার কারণে উপজেলার উত্তর ধুরুংয়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় গেল বর্ষায়
আউশ-আমনের ফসল ফলাতে পারেনি কৃষকেরা। ফলে ওই এলাকার প্রায় দেড় হাজার হেক্টর
ফসলি জমি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হয়ে অন্তত: ৪০ হাজার মানুষ মারাত্মক খাদ্য
সঙ্কটের শিকার হয়েছে। বর্ষার শুরুতে দ্রুত রিঙবাঁধের ব্যবস্থা নেয়া হলে ওই
এলাকায় চাষাবাদ করা যেত। পক্ষান্তরে অপচয় হতোনা সরকারী অর্থেরও। এ অবস্থায়
বরাদ্ধকৃত টাকার কাজ কেবা কারা কখন বাস্তবায়ন করছে এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন
দেখা দিয়েছে।
পানি
সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও প্রতি মন্ত্রী নজরুল
ইসলাম বীর প্রতীক গত ১৭ আগষ্ট কুতুবদিয়ার দূর্গত এলাকা সফরকালে বিধ্বস্থ
বাঁধ পুণ:নির্মাণ-সংস্কার কাজ যথাসময়ে শেষ না করায় পাউবোর কর্মকর্তা ও
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে দায়ি করেছিলেন। পিকআওয়ারে কাজ শেষ হলে সরকারের
ভাবমূর্তি যেমন উজ্জল হতো তেমনিভাবে এলাকাবাসীও নিরাপদে থাকতো বলে খোদ
মন্ত্রীগণই মন্তব্য করেন। এ সময় মন্ত্রীদ্বয় বর্ষায় জোয়ার ঠেকাতে জরুরী
রিঙবাঁধসহ স্থায়ী বেড়িবাঁধের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বস্থ করেছিলেন
দ্বীপবাসীকে। কিন্তু দীর্ঘ একমাস পর ৩৫ লাখ টাকায় রিঙবাঁধ নির্মাণকাজ
রাজনৈতিকভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা
গেছে, পাউবোর কর্মকর্তা ও ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বুধবার
বেড়িবাঁধের ভাঙগা অংশ পরিদর্শন করেন। বর্ষাজুড়ে জোয়ার-ভাটার কারণে উত্তর
ধূরুং এলাকায় হয়নি চাষাবাদ। বিধ্বস্থ অবস্থায় পড়ে আছে সহ¯্রাধিক বসতঘর। লবণ
পানিতে ডুবে রয়েছে কয়েক হাজার পুকুর-জলাশয়। ধূ-ধূ মরুভূমিতে পড়ে আছে মাঠের
পর মাঠ। নি:স্ব বেকারত্বের শিকার হয়ে চরম অভাব-অনটনে ভোগছে হাজার হাজার
মানুষ। গেলো মৌসুমে লবণের দাম না থাকায় স্বর্ণালঙ্কারসহ সুদি টাকা নিয়ে
চাষে নেমেছিলেন দূর্গত এলাকা উত্তর ধূরুংয়ের বর্গাচাষী জাকের হোছাইন, ছাবের
আহমদ, এয়ার মোহাম্মদ, জাফর আহমদ, হাবিব উল্লাহ, আবু ছৈয়দ, রিদোয়ান, আবদুল
খালেক, মীর কাশেম, আখতার আহমদ, নুরুল হুদা, মোজাম্মেল, আবদুল জলিল,
শফিউল্লাহ, কালু মাঝি ও আবদুল মোনাফসহ আরো অনেকেই। কিন্তু চাষাবাদ নষ্ট হয়ে
যাওয়ায় হালের গরু, পাওয়ারটিলারসহ কৃষি সরঞ্জামাদি বিক্রি করে সংসার চালানো
ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই বলে তারা জানিয়েছেন। দক্ষিণ ধূরুংয়ের বর্গাচাষী
নুরুল হুদা, লেমশীখালীর মুহাম্মদ হুসেন, কৈয়ারবিলের শামশুল আলম, বড়ঘোপের
আখতার হুসেন ও আলীআকবর ডেইলের ছালেহ আহমদস আরো অনেকে জানান, ৭১ নম্বর
পোল্ডার গোটা ™¦ীপের ৪০ বর্গ কি.মি. বেড়িবাঁধের প্রায় ১৫/২০ কি.মি. খোলাসহ
মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকায় তারা শঙ্কিত। জরুরী আর্থওয়ার্কের ৩৫ লাখ টাকার
রিঙবাঁধ নির্মাণ কাজ স্থানীয় এমপির পরামর্শক্রমে কম সময়ের মধ্যে (জিপিএম
প্রসেসে) শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী
এ.কে.এম.শফিকুল হক।
Comments[ 0 ]
Post a Comment