জাপানের ‘‘ওইতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক”
বাংলাদেশী তরুণ বিজ্ঞানী ড.মুহাম্মদ শাহজাহান কুতুবী ‘নতুন রাসায়নিক অণুঘটক
প্যালডিয়াম-রুথেনিয়াম ধাতুদ্বয়ের সঙ্কর ন্যানুকণা (ক্যাটালিষ্ট; পিডি-আরইউ
স্যলিড সলিউশন এ্যলো ন্যানুপারটিকলেস্) আবিস্কার করেছেন। বিশ্বের বাঘা
বাঘা বিজ্ঞানীদের ভীড়ে বাংলাদেশের অবহেলিত একটি দ্বীপ-উপজেলা কুতুবদিয়ার
সন্তান’র স্থান পাওয়া বিশাল অর্জন বলে জাতি মনে করেন।
তার আবিস্কৃত
চমৎকার ক্যাটালিষ্ট বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করে বহু
উচ্চমাত্রায় উৎপাদ (প্রোডাক্ট) উৎপন্ন করে। যা গত ২৭ মার্চ ওয়াইপোর
(ওয়ার্ল্ড ইনটিলিক্চুয়াল প্রপার্টি অর্গনাইজেশন) স্বত্বাধিকার স্বীকৃতি লাভ
করেছে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে, আমেরিকার ফেডারেল নিউজ সার্ভিস,
আমেরিকার স্টেট নিউজ এবং বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সংবাদ ম্যাগাজিন ৩১ মার্চ এনিয়ে
সংবাদ প্রকাশ করেছে। এই গবেষণা কর্মে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের তার ২ সহযোগি
বিজ্ঞানী হলেন ড.কাত্সুত্শি নাগাওকা ও ড.কাত্সুত্শি সাতো এবং কিয়োতো
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ বিজ্ঞানী ড.হিরোশি কিতাগাওয়া ও ড.কোহেই কুসাদা।
ড.
মুহাম্মদ শাহজাহান কুতুবীর মতে অণুঘটকটির অনন্য বৈশিষ্ট হচ্ছে এক সঙ্গে
লুইস এসিড ও লুইস ক্ষার এর ধর্ম প্রকাশ করেএবং সকল ধরনের রাসায়নিক
বিক্রিয়ায় অণুঘটক হিসেবে রাসায়নিক বিক্রিয়াকে খুব দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করে
উচ্চ মাত্রায় উৎপাদ (প্রোডাক্ট) উৎপন্ন করে। ক্ষতিকারক কার্বন মনোক্সাইড
গ্যাস অক্সিডেশন, নাইট্রোজেন গ্যাস সমূহের অক্সিডেশন, মিথেন গ্যাস থেকে
হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদন করে এলকোহেল’র অক্সিডেশন বা রিডাকশন বিক্রিয়া
দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারের বিভিন্ন কেমিকেল যেমন মেডিসিন’র রঅ মেটিরিয়েল অথবা
সরাসরি মেডিসিন উৎপাদনে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সলিড প্যাস ক্যাটালিষ্ট হিসেবে
তা খুব কার্যকরী অণুঘটকের কাজ খুব দ্রুত গতিতে বিক্রিয়া সম্পন্ন করে উচ্চ
মাত্রায় প্রোডাক্ট উৎপন্ন করে। যেমন যে রাসায়নিক বিক্রিয়া সাধারণভাবে
ব্যবহৃত অণুঘটকে দু’ ঘন্টার অধিক সময়ে সম্পন্ন হয়, সেটি এই নতুন অণুঘটকের
মাধ্যমে মাত্র ৫মিনিটে শতভাগ উৎপাদ দেয়। আবার এই অণুঘটক পুনরায় ব্যবহার করা
যায়। দেখা গেছে যে, সাধারণ বায়ু মন্ডল পরিবেশে দু’ বছরের কার্যকারিতা নষ্ট
হয়না। ওয়াইপোর মতে এই অণুঘটক মাল্টিপারপাস রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ব্যবহার
উপযোগি হিসেবে এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বর্ণনা করেন যে, গত
৩১ মার্চ জাপানের বিখ্যাত কেমিক্যাল কোম্পানীর সাথে জাপান সাইন্স এন্ড
টেকনোলজি এজেন্সী এবং এই বিজ্ঞানী গ্রুপ একটি চুক্তি করেন। (১) এই নতুন
আবিস্কারের ওপর জাপান সাইন্স এন্ড টেকনোলজি এজেন্সীতে প্রথম আবেদন
সেপ্টেম্বর-২০১২। স্বীকৃতি পায় এপ্রিল-২০১৩। (২) আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির
জন্য আবেদন করেন-১৮ সেপ্টেম্বর-২০১৩। ওয়াইপো স্বীকৃতি দেয় ২৭মার্চ-২০১৪।
(৩) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশিত হয় ৩১মার্চ-২০১৪।
বিরল
প্রতিভাবান এই তরুণ বিজ্ঞানী ড.মুহাম্মদ শাহজাহান কুতুবী জন্ম
.......কক্সবাজার জেলার দ্বীপ-উপজেলা কুতুবদিয়ার উত্তর ধূরুংয়ের ফয়জানি
পাড়ার আবুল কালাম ও তাহেরা বেগম’র সন্তান। তিনি ১৯৯১ সনে সতরুদ্দীন
হাইস্কুল থেকে টেলেন্টপুলে জুনিয়র বৃত্তি, ১৯৯৪ সনে কক্সবাজার সদর
নাপিতখালি হাইস্কুল থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি, ১৯৯৬ সনে চট্রগ্রাম কলেজ
থেকে প্রথম বিভাগে এইচএসসি, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে
বিএসসি (অনার্স) এমএসসি (থিসিস ভৌত রসায়ন) প্রথম শ্রেণীতে পাস করে ২০০৬ সনে
জাপান সরকারের বৃত্তি নিয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য জাপান গমন করেন। জাপানের
সাগা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্চ ২০০৯ সনে এমএসসি (ইলেক্ট্রোকেমিষ্ট্রি),
মার্চ ২০১২ সনে পি.এইচ.ডি. (জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া) লাভ করেন। জৈব রাসায়নিক
বিক্রিয়া গবেষণায় অবদানের জন্য গ্লোবালাইজেশন প্রোগ্রাম’র আওতায় ফরেন্স
এক্সিলেন্স রিচার্সার হিসেবে ২০১১ সনের নভেম্বরে সাগা বিশ্ববিদ্যালয়ে
সেমিনার এ্যওয়ার্ড লাভ করেন। ড.শাহজাহান কুতুবী ২০১২ সনে জাপানের ওইতা
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়ে গবেষণা কাজে নিয়োজিত আছেন।
আন্তর্জাতিক
পরিমন্ডলে বাংলাদেশকে গর্বিত করায় ড.মুহাম্মদ শাহজাহান কুতুবী, তার
পরিবার-পরিজনের সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে অভিনন্দন জানিয়েছেন
কুতুবদিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আ.ন.ম.শহীদ উদ্দিন ছোটন ও সেক্রেটারী হাছান
কুতুবী।
Comments[ 0 ]
Post a Comment