সমুদ্র
সৈকতে উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছে ছোট্ট দেহটা। একের পর এক ঢেউ আছড়ে পড়ছে তার
উপর। অথচ কোনও সাড় নেই তার শরীরে। সপ্তাহ খানেক আগে ঠিক এই রকম একটা ছবি
তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল বিশ্বে।
সিরীয় শিশু আয়লান কুর্দির সেই ছবি যেন ফিরে এল তুরস্কের আর এক সৈকতে। এ বার
সিরিয়া থেকে গ্রিসে পালাতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হল চার বছরের এক
শিশুকন্যার। তুরস্কের উপকূলবর্তী ইজমির প্রদেশের এজিয়ান শহরের এক সৈকতে
ভেসে এসেছে তার নিথর দেহ। তবে এখনও পর্যন্ত পরিচয় জানা যায়নি ওই শিশুর।
শুধু জানা গিয়েছে, সিরিয়া থেকে গ্রিসের চিওস দ্বীপে যাচ্ছিল তার পরিবার।
একটা ডিঙিতে ১৫ জন শরণার্থী মিলে যাত্রা শুরু করেছিলেন। কিন্তু মাঝ সমুদ্রে
ডুবে যায় সেই ডিঙি। সিরীয় উপকূলরক্ষীরা ১৪ জনকে উদ্ধার করলেও বাঁচানো
যায়নি ওই শিশুকন্যাকে। পরে তুরস্কের সৈকতে পাওয়া যায় তার দেহ।
ঠিক একই ভাবে সিরিয়া থেকে গ্রিস যেতে গিয়ে নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয়েছিল
আয়লানের। দুর্ঘটনায় মারা যান তার মা, দাদাও। তুরস্কের সরকার জানিয়েছে, চলতি
বছরে প্রায় ৫৩ হাজার শরণার্থীকে উদ্ধার করেছে তাদের উপকূলরক্ষী বাহিনী।
বস্তুত আয়লানের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরেই নড়েচড়ে বসে
ইউরোপের দেশগুলি। সিরিয়া-ইরাক থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার শরণার্থীর জন্য
দরজা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেয় কয়েকটি দেশ। যার মধ্যে অন্যতম ছিল
জার্মানি। কিন্তু প্রথম কয়েক দিনেই জার্মানিতে এত শরণার্থী ঢুকেছে যে
সীমান্তে ফের কড়াকড়ি শুরু করতে বাধ্য হয় বার্লিন। একই অবস্থা
ক্রোয়েশিয়ারও। শরণার্থীদের ঢল সামলাতে আজ থেকে সার্বিয়া সীমান্তে কড়া
নজরদারি শুরু করেছে ক্রোয়েশিয়া সরকার। আর তাতেই ক্ষুব্ধ সার্বিয়া সরকার।
বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে তারা। সমাজ বিষয়ক
মন্ত্রী আলেকজান্ডার ভুলিন বলেন, ‘‘অন্য কারও অক্ষমতার দাম আমাদের সরকার
দিতে পারবে না।’’ যদিও ক্রোয়েশিয়ার পুলিশ জানাচ্ছে, সীমান্তে নজরদারি
বাড়ানো সত্ত্বেও দলে দলে শরণার্থী ঢুকেই চলেছে তাদের দেশে।
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা
Comments[ 0 ]
Post a Comment