অরক্ষিত এলাকায় চলতি শুস্ক মৌসুমে স্থায়ি প্রতিরক্ষাবাঁধ নির্মাণ অনিশ্চিত! অস্তিত্বের সংকটে কুতুবদিয়া by হাছান কুতুবী
Thursday, October 30, 2014
কুতুবদিয়া প্রতিরক্ষা বাঁধের বৃহৎ অংশ
খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘ড্যামিজ পোল্ডাডার
নামে ৫৪ কোটি টাকার একটি প্রস্তাব (ডিপিপি)’ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে
দীর্ঘদিন আগে প্রেরণ করেছে বলে জানা যায়। কিন্তু মন্ত্রণালয় ও একনেক এখনো
পর্যন্ত তা অনুমোদন না দেয়ায় শেষ পর্যন্ত চলতি শুস্ক মৌসুমে স্থায়ি
প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিষয়ে জরুরী পদক্ষেপ
গ্রহন না করলে দেশের সম্ভাবনাময় কক্সবাজারের দ্বীপ-উপজেলা কুতুবদিয়ার
অস্তিত্ব চরম হুমকির মূখে পড়তে পারে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক
খ্যাতিসম্পন্ন পরিবেশ বিজ্ঞানী কুতুবদিয়ার চার কৃতি সন্তান সরকারের সাবেক
সচিব আ.ন.ম.নাসিরউদ্দীন, ‘নিউজার্সীর মন্মাউথ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের সোস্যাল সাইন্সের প্রফেসর ও সহযোগী ডিন ড.গোলাম মুহাম্মদ মাতবর, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেষ্ট্রি এন্ড এনভায়ারমেন্ট সাইন্সের প্রফেসর ড.কামাল হোসাইন এবং জাপানের ওইতা বিশ্ববিদ্যলয়ের তরুণ গবেষক ড. মুহাম্মদ শাহজাহান কুতুবীসহ আরো অনেকে।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgGQI2DQnJRq2gU2ptnD5RaDWnH6N2AIIbmpc9jGjYc3VHyg1sI3hjTNXYEvPAW4W-YcgGb9bjyUrcQPMQsBqTrLHptvH5Ps8DUafUGRt-X2-pkVukbu7A0uqI7dC7NmujMgW2YOZDkG1JQ/s1600/kutubdi1.jpg)
কুতুবদিয়ায়
বর্ষার আগে চাষাবাদ ও জনবসতি রক্ষায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আপতকালিন জরুরী
মাটির বাঁধ এবং শুস্ক মৌসুমে স্থায়ি বাঁধের কাজ হত। কিন্তু গেল বর্ষায় কাজ
না হওয়ায় প্রতিরক্ষা বাঁধের বিশাল খোলা অংশ দিয়ে নিয়মিত সামুদ্রিক নুনা
জোয়ারের পানি ওঠা-নামা করায় উত্তর ধূরুংসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় হয়নি চাষাবাদ।
বসতঘর হারায় কয়েক হাজার মানুষ, বিধ্বস্ত হয় রাস্তা-ঘাট ও লবণ পানিতে ভর্তি
হয়ে আছে সমস্ত পুকুর-জলাশয়। ওসব এলাকায় বর্তমানে খাদ্য সংকটের পাশাপাশি
তীব্র সমস্যা দেখা দিয়েছে পানীয় জলের।
৪০ বর্গ কি.মি. দ্বীপরক্ষা বাঁধের
মধ্যে পাউবো কর্তৃপক্ষ ৮কি.মি. ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করলেও সরেজমিন
পরিদর্শনে দেখা গেছে, উত্তর ধূরুং, দক্ষিণ ধূরুং, কৈয়ারবিল, বড়ঘোপ ও আলী
আকবরডেইল এলাকার পশ্চিমে জোয়ার ঠেকানোর মতো বাঁধ নেই এবং দ্বীপের পূর্ব
পাশের পুরো এলাকা রয়েছে অরক্ষিত। এ ছাড়া চর ধূরুং ও কাইছার পাড়া এলাকার
প্রায় ৫কি.মি. ভাঙা অংশে সিসিব্লক দ্বারা স্থায়ি বাঁধ নির্মাণ করা না হলে
খুদিয়ারটেকের মতো গোটা উত্তর ধূরুংও সমুদ্র গর্ভে বিলীন হবার আশঙ্কা করছে
উন্নয়ন বিশ্লেষক মহল। জলবায়ুর প্রভাবে সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলেও
পাউবো কর্তৃপক্ষের মান্দাতা আমলের ডিজাইনে করা বাঁধে বহু সরকারি অর্থ ব্যয়
হলেও ঠেকানো যাচ্ছেনা ভয়াবহ ভাঙন। এ অবস্থায় সমোপযোগি ডিজাইনে মাটির বাঁধের
সাথে সিসিব্লক বসালে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব বলে অভিজ্ঞ মহল জানিয়েছেন।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgrfvR2xIeevLsXDtPaZfVv9HqzcAb0ekMSQTfpvcqKrvCQLRzMpE269xxQW9zQNWQeCUFY7fIyenTHhgJV_G2i4-sPaRV0xsF8MoJrso0CrKmaxT4Igc2KL7J3K-xO_sF0q5R6hV_Z69H4/s1600/kutubdia1.jpg)
আলীআকবর
ডেইল বায়ু বিদ্যুত প্রকল্পের দক্ষিণ পয়েন্টে গত ১১-১২ অর্থ বছরের ১৬ কোটি
টাকার ‘প্যাকেজ নম্বর ডব্লিউ ৩-এ- ১১শ’ মিটার সিসিব্লক দ্বারা
প্রতিরক্ষাবাঁধের জন্য প্রায় ৫০ হাজার ব্লক তৈরী করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড,
বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও ঠিকাদারি সংস্থা মেসার্স আতাউর রহমান (প্রো.আতিক উদ্দিন
চৌধূরী ও রেজাউল করিম) রশিটানাটানির কারণে টেন্ডার বাতিল হয়ে যায়। বর্তমানে
ওসব ব্লকের অধিকাংশ বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিগত চারবছর ধরে ওই খোলা পয়েন্টে
নিয়মিত জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হয়ে তাবালেরচর ও আনিচের ডেইলের প্রায় ১২হাজার
হেক্টর ফসলী জমি পরিত্যক্ত হয়ে ক্ষতির শিকার হয়েছে ৪০ হাজার মানুষ। পরে
পুন: টেন্ডারে ওই প্যাকেজটি কক্সবাজার উন্নয়ন ইন্টারন্যশনাল পেলেও মামলা
সংক্রান্ত জটিলতায় কাজ শুরু করতে পারেনি। জটিলতা কেটে ওঠলে আগামী নবেম্বরের
শেষে কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছেন ঠিকাদারী সংস্থাটির লীড পার্টনার আতিকুল
ইসলাম সিআইপি। একই গ্রামের কাহারপাড়া এলাকায় ২০ চেইন বেড়িবাঁধে মারাত্মক
ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়ে আলীআকবর ডেইলসহ উপজেলা সদর বড়ঘোপ চরম অরক্ষিত হয়ে আছে।
এদিকে গত মাসের শেষের দিকে ক্ষমতাসিন দলের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে ৬
প্যাকেজে ৫০ লাখ টাকার মাটির কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন পাউবো’র উপ-সহকারি
প্রকৌশলী এ.টি.এম. মাসুদুর রাব্বী। দ্বীপবাসীর বাঁচা-মরার প্রশ্নে সরকারের
জরুরী পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে জানিয়েছেন কুতুবদিয়া বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি
আ.স.ম.শাহরিয়ার চৌধূরী।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়া গেলে অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় স্থায়ি
প্রতিরক্ষা বাঁধের কাজ শুরুর কথা জানিয়েছেন পাউবো কক্সবাজারের নির্বাহি
প্রকৌশলী শফিকুল হক।
Tags:
Lead News,
সরেজমিন প্রতিবেদন,
হাছান কুতুবী
Comments[ 0 ]
Post a Comment