Sunday, August 28, 2016

বখাটের ছুরিকাঘাতে আহত রিশার মৃত্যু

বখাটে এক যুবকের ছুরিতে আহত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা মারা গেছে। তিন দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তিন দিন আগে ঢাকার কাকরাইলে তাকে ছুরিকাঘাত করেছিল ওই বখাটে। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার গণমাধ্যমকে বলেন, মেয়েটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে। চৌদ্দ বছর বয়সী সুরাইয়া আক্তার রিশা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাবার নাম রমজান, বাসা পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে। গত বুধবার দুপুরে স্কুলের সামনে ফুটওভার ব্রিজের উপরে রিশার পেট ও হাতে ছুরি মেরে পালিয়ে যায় এক ‘বখাটে যুবক’। রিশার মা তানিয়া বেগমের বরাত দিয়ে রমনা থানার ওসি মশিউর রহমান সেদিন জানিয়েছিলেন, কয়েক মাস আগে ইস্টার্ন মল্লিকার বৈশাখী টেইলার্সে একটি জামা বানাতে দিয়েছিলেন তিনি। যোগাযোগের জন্য সেখানে তিনি নিজের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। ওবায়েদ নামে ওই দোকানের এক কর্মচারী ফোন করে রিশাকে বিরক্ত করছিল। এ কারণে রিশার মা ওই মোবাইল সিমটি বন্ধ করে দেন। তার ধারণা, ওবায়েদই রিশাকে ছুরি মেরেছে। পরে ওই টেইলার্সে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওবায়েদ দুই মাস আগে চাকরি ছেড়ে সেখান থেকে চলে গেছে। এ ঘটনায় রিশার মা ওবায়েদকে আসামি করে বুধবার রমনা থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে, ওবায়েদকে এখনও আটক করতে পারেনি পুলিশ।

Tuesday, June 21, 2016

সাহসই সম্বল তাঁদের

‘জীবনে বহু ঘূর্ণিঝড় দেখেছি। হারিয়েছি অনেক স্বজন, কিন্তু মনোবল হারাইনি। রোয়ানুর আঘাতে কিরণপাড়ার শতাধিক ঘর ভেঙে গেছে, কিন্তু আমরা ভেঙে পড়িনি। সাহসকে সম্বল করে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।’
বলছিলেন কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার আলীআকবরডেইল ইউনিয়নের কিরণপাড়ার জেলে শাহ আলম (৬৩)।
গত বৃহস্পতিবার সমুদ্রতীরবর্তী আলীআকবরডেইল ইউনিয়নের কিরণপাড়া, সাগরপাড়া ও গহরপাড়া ঘুরে এ রকম আরও সাহসী মানুষের সঙ্গে কথা হয়।
শাহ আলমের পাশের ঘরের কাঞ্চন মিয়া (৫২) বলেন, ‘২৫ বছর আগের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে এই দ্বীপের ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সে সময় নারিকেলগাছ ধরে টানা চার ঘণ্টা ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে প্রাণ রক্ষা করেছি। অথচ এখন আমরা ভাঙা বেড়িবাঁধের সংস্কারের জন্য সরকারের দিকে চেয়ে আছি।’
কিরণপাড়ার পশ্চিমে পাথরের ব্লক দিয়ে তৈরি লম্বা বেড়িবাঁধ। পানি থেকে ১০ ফুট দূরত্বে বেড়িবাঁধের ওপর ঝুপড়িঘরে বসবাস করছে কয়েকটি পরিবার।
একটি ঘরের বাসিন্দা গৃহবধূ সালমা খাতুন (৪৪) বলেন, ‘রাতে যখন ঘুমাতে যাচ্ছিলাম, তখন সমুদ্র তিন হাত দূরে। জানা ছিল, এর বেশি পানি উঠবে না। কিন্তু নিম্নচাপের কারণে এখন সমুদ্র প্রচণ্ড উত্তাল। তাই একটু সতর্ক থাকতে হবে।’
কিরণপাড়ার উত্তরে বেড়িবাঁধের কিছু অংশ ভাঙা। এই ভাঙা অংশ দিয়ে সাগরের পানি ঢুকে কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।
একই পরিস্থিতি দেখা গেল উত্তর ধুরুং ইউনিয়নেও। রোয়ানুর প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধ ভেঙে ইউনিয়নে সাত হাজারের মতো ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। কিন্তু মনোবল হারাননি এলাকার বাসিন্দারা।
ইউনিয়নের আকবরবলীপাড়ার গৃহবধূ রশিদা বেগম (৪৫) ভাঙা বেড়িবাঁধ দেখিয়ে বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিরা বললে গ্রামের হাজারো মানুষ বেড়িবাঁধ সংস্কারে নেমে যাবে। তাহলে অন্তত ঘরবাড়িতে জোয়ারের পানি ঢুকে যাওয়া ঠেকানো যাবে। কিন্তু সাহসী মানুষগুলোকে মাঠে নামানোর কেউ নেই। সাহস আছে বলেই আমরা জন্মভিটায় পড়ে আছি।’
উত্তর ধুরুং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহরিয়ার চৌধুরী বলেন, ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের মধ্যে সরকারি-বেসরকারিভাবে এ পর্যন্ত প্রায় এক কোটি টাকার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু এই টাকায় ভাঙা বেড়িবাঁধের কিছু অংশ সংস্কার করলে মানুষ বেশি লাভবান হতো। তিনি বলেন, বেড়িবাঁধ নেই বলেই শ্রমজীবী মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারছে না।
শাহরিয়ার চৌধুরী বলেন, এখানকার মানুষ সাহসী। কিন্তু আর্থিক সংকটে অনেকে বিপর্যস্ত। আগে স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙা বেড়িবাঁধের সংস্কার হলেও এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ লোকজন টাকা ছাড়া কাজ করতে রাজি হচ্ছে না। তা ছাড়া স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায় ১০ কিলোমিটারের ভাঙা বেড়িবাঁধ সংস্কার মোটেও সম্ভব নয়।
এই ইউনিয়নের আজম সড়কের দুপাশে ঝুপড়িঘর তৈরি করে বসবাস করছে গৃহহীন শতাধিক পরিবার। অধিকাংশ ঘরে কোনো পুরুষের দেখা মেলেনি। তাঁরা আয়-রোজগারের জন্য কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় পাড়ি জমিয়েছেন।
একটি ঘরের বাসিন্দা আলেয়া বেগম (৩৫) বলেন, ‘সমুদ্র উপকূলেই আমাদের জন্ম। সমুদ্রের গর্জন আমাদের সাহসী করে তোলে। কিন্তু নানা অবহেলায় আমরা দুর্বল হয়ে পড়ছি। গত ২৫ বছরে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের নামে শত কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী বেড়িবাঁধ হচ্ছে না।’

Wednesday, January 13, 2016

ছাত্রলীগের সঙ্গে রাস্তায় মিছিলের পরেও রায় লিখছেন বিচারপতি মানিক!

২৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার বাড়ি ঘেরাওয়ে উপস্থিত
বিচারপতি মানিক (লাল বৃত্ত চিহ্নিত) -চ্যানেল নাইন
সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে রাজপথে মিছিল-সমাবেশ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাড়ি ঘেরাও করতে যাওয়ার পরেও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় লিখছেন বিতর্কিত সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে তা কার্যকরও হয়েছে, সেই দুটি রায় দানকারী বিচারপতিদের অন্যতম ছিলেন বিচারপতি মানিক।
কিন্তু গত ১ অক্টোবর অবসর নেওয়ার পরের মাসেই দেখা যায় বিচারপতি মানিক সেই একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে ফাঁসি হওয়া জামায়াত নেতাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানাচ্ছেন, যেই সংগঠনটি জামায়াত নেতাদের বিচারের দাবিতে রাজনীতিতে প্রায় দুই যুগ ধরে সক্রিয়।
এ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজন দাঁড়িয়েছে যে, বিচারপতি মানিক বিচারের নামে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে পক্ষপাত দুষ্টু হয়ে বিরোধী দলীয় নেতাদের ফাঁসি দিয়েছেন কি না।
এমনটি হলে বিচারপতি মানিকের বিচারের প্রশ্নটিও আসবে। আর আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানের মামলার মরনোত্তর বিচার ও তাদের পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করার নৈতিক দায়িত্বও অর্পিত হবে উচ্চ আদালতের উপর।
কিন্তু বিচারপতি মানিকের ব্যাপারে উচ্চ আদালত এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। বরং প্রধান বিচারপতিকে লেখা তার একটি চিঠিতে দেখা যাচ্ছে তিনি ছাত্রলীগের সঙ্গে মিছিল-সমাবেশ করার পরেও আপিল বিভাগের রায় লিখে যাচ্ছেন। সেই রায় লেখতে গিয়ে তিনি সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত বলে অভিযোগ করছেন।
বিচারপতি মানিকের চিঠি থেকে জানা গেছে, অবসরে যাওয়ার পর তিনি আর কোনো রায় লিখতে পারবেন না বলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি অবসরে যাওয়ার কয়েকদিন পরেই প্রধান বিচারপতি তার অফিস রুমে তালা দিয়ে দিয়েছেন এবং অফিস স্টাফসহ রায় লেখার জন্য একজন বিচারপতি যে সকল অতি প্রয়োজনীয় সুবিধা পেয়ে থাকে, সেসব সুবিধা প্রত্যাহার করেছিলেন।
পরে ডিসেম্বরের শুরুতে বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাসহ আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতিদের অনুরোধে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছিলেন, “তিনি ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার কাছে অপেক্ষমান রায়গুলো লিখতে বা সই করতে পারবেন, এর পরে পারবেন না।”
মানিক জানান, “এরপরে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের শেষে প্রধান বিচারপতি স্টাফ হিসেবে তাকে বি ও পি ও এবং পিওন দিলেও রায় লেখার জন্য কোন অফিস রুম বরাদ্দ দেয়া হয়নি।”
চিঠিতে বিচারপতি মানিক জানান, সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের জন্য বাধ্য হয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের রুমে বসে অনেক প্রতিকূল অবস্থায় অপেক্ষামান রায়গুলো লিখে যাচ্ছেন।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের রুমে অন্য বিচারপতিরাও অধিকাংশ সময়ে উপস্থিত থাকেন এবং রুমে কোন কম্পিউটার নাই বলে রায় লেখার সুযোগ কম বলে চিঠিতে মন্তব্য করেন অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি।
তিনি আরো অভিযোগ করেছেন, গত ১ জানুয়ারি তার বি ও পি ও এবং পিয়নসহ সব স্টাফদের অন্য বিভাগে বদলি করে দেয়া হয়েছে।
“তার লেখা অপেক্ষমান রায়গুলো লেখা সাংবিধানিক দায়িত্ব এবং সে দায়িত্ব পালনে প্রধান বিচারপতি কোন বাধা তৈরী করতে পারেন না” মন্তব্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির
মানিকের অভিযোগ, তার কাছে অপেক্ষমান রায়গুলো লেখার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে তার সাংবিধানিক অধিকারে প্রধান বিচারপতি হস্তক্ষেপ করেছেন এবং লংঘন করছেন।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের রায়ে সই করতে না দেয়ার সিদ্ধান্তের কারণে ১৫তম, ১৩তম, ৫ম, ৭ম সংশোধনি মামলার রায়, জেল হত্যা মামলার রায়, মাজদার হোসেন মামলার রায়সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত এ বিচারপতি অভিযোগ করেছেন, প্রায় তিন মাস রায় লেখা থেকে বঞ্চিত ছিলেন এবং এবছরের শুরু থেকে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেয়ায় আবার তিনি রায় লেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
কিন্তু তথ্যানুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, বিচারপতি মানিক অবসরে যাওয়ার পর তিনি নিজের এমন রাজনৈতিক অবস্থান দৃশ্যমান করেছেন যে অবসরে যাওয়ার পর তার রায় লেখার সুযোগ দূরে থাক তার বিচারিক ক্ষমতা ভূতাপেক্ষিকভাবে বাতিল হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক চলতি বছরের ১ অক্টোবর অবসর নেন। এরপর গত ২৬ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “জিয়ার বদৌলতে জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীরা সম্পদের পাহাড় গড়েছে। সাকা-মুজাহিদ বলে গেছে, তাদের অর্থের সাম্রাজ্য থেকে গেছে। এ সাম্রাজ্য ব্যয় হবে সন্ত্রাসী কাজে।”
তিনি আরো বলেন, “জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন অনুকূলে রয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত না করলে তা দিয়ে সন্ত্রাস ও লবিস্ট নিয়োগে ব্যবহার করবে। এখনই এ ব্যবস্থা নিতে হবে। এখনই সরকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করলে সংবিধান অনুযায়ী তারা কোনো রিট করার সুযোগ পাবে না।”
সংবাদ সম্মেলনে বিচারপতি মানিক ছাড়াও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সহ-সভাপতি অধ্যাপত মুনতাসির মামুন ও শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এই তিন জন দণ্ডিত জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষী দিয়েছেন। তারা ১৯৯২ সালে গণআদালতে জামায়াত নেতাদর ফাঁসি ঘোষণার সঙ্গেও জড়িত।
এদিকে গত ২৯ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নেন  বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে খালেদা জিয়ার মন্তব্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে ছাত্রলীগসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন এই ঘেরাওয়ের আয়োজন করে।
এ সময় বিচারপতি মানিক অন্যদের সঙ্গে জয়বাংলা বলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। সেখানে তিনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বক্তৃতাও করেন।
ওই সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, সম্পাদক ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী প্রমুখ অংশ নেন।
এদিকে গত সোমবার দিবাগত রাতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের এক টকশোতে অংশ নিয়ে বিচারপতি মানিক বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশ থেকে বের করে দিয়ে তাকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেন।
উল্লেখ্য, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বিচারপতি মানিক ১৯৭৮ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
হাইকোর্ট বিভাগে ২০০১ সালের ২ জুলাই অস্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৩ সালের ২ জুলাই পর্যন্ত অস্থায়ী বিচারপতি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্থায়ী নিয়োগ না হওয়ার তখন তিনি বিচারপতি পদ থেকে বাদ পড়েন। পরে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান শামসুদ্দিন চৌধুরী। ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ আপিল বিভাগে পদোন্নতি পান তিনি।
হাইকোর্টের বিচারক থাকাকালে সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী, কর্নেল তাহেরের গোপন বিচার, বিজিএমইএ ভবন সংক্রান্ত মামলাসহ বহু আলোচিত রায় তার হাত দিয়ে আসে।
একই সঙ্গে সব সময়ই কিছু না কিছু বিতর্ক দিয়ে আলোচনায় থেকেছেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী। রাষ্ট্রের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি, গণমাধ্যম সম্পাদকরা তার আদালতে গিয়ে কাঠগড়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেছেন। শুনেছেন ভর্ৎসনা ও তীর্যক সব মন্তব্য, যা বিচারপতি বিচারপতি মানিকের পেশাদারিত্বকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব রয়েছে। লন্ডনে তার নিজের বাড়িও রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা আত্মসাতসহ দুর্নীতির বেশ কিছু অভিযোগও রয়েছে।