গাজার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এই পরিকল্পনা যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা ভূখণ্ডে নিরাপত্তা দেয়ার উদ্দেশ্যে একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠনের অনুমোদন দেয়। ভবিষ্যতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাব্য পথেরও ইঙ্গিত দেয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিবিএস নিউজ। এতে বলা হয়, রাশিয়া এর একটি বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল। রাশিয়া ও চীন যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় ভোটে বিরত থাকে। ১৫ সদস্যের পরিষদে ১৩-০ ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয় সোমবার। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ আশা করেছিল রাশিয়া ভেটো ব্যবহার করে প্রস্তাবটি আটকে দেবে না।
এই
ভোট ছিল ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে দুই বছরের যুদ্ধের পর গাজার ভবিষ্যৎ
নির্ধারণ এবং নাজুক যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ
ধাপ। আরব ও অন্যান্য মুসলিম দেশ আন্তর্জাতিক বাহিনীতে সেনা পাঠাতে আগ্রহ
দেখিয়েছে। তবে তারা জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন তাদের অংশগ্রহণের
জন্য অত্যাবশ্যক। যুদ্ধবিরতি ১০ অক্টোবর কার্যকর হয়। কিন্তু হামাস ও
ইসরাইলের পারস্পরিক অভিযোগ, তারা শর্ত লঙ্ঘন করেছে। এর মধ্য দিয়ে চুক্তিকে
হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে।
চুক্তির প্রথম ধাপ অনুযায়ী, হামাসকে জীবিত ও
মৃত সব জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। বিনিময়ে ইসরাইলের হাতে থাকা প্রায়
২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়া হবে। জীবিত জিম্মিরা নির্ধারিত সময়ের
মধ্যে ফেরত এলেও বাকি মৃত জিম্মিদের দেহাবশেষ পুরোপুরি হস্তান্তর করা
যায়নি। হামাস ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই জানিয়েছে যে গাজার ভয়াবহ ধ্বংসস্তূপের
কারণে দেহাবশেষ উদ্ধার কঠিন হয়ে পড়েছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন
নেতানিয়াহু এটিকে চুক্তি লঙ্ঘন হিসেবে দাবি করেছেন।
চুক্তি কার্যকর
হওয়ার পরও গাজায় সহিংসতা ঘটেছে। এর মধ্যে ইসরাইলি বিমান হামলা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, ইসরাইল প্রতিশ্রুত সব
মানবিক সাহায্য গাজায় পৌঁছে দিচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবটি
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২০ দফার যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনাকে অনুমোদন করে। এতে
‘বোর্ড অব পিস’ নামে একটি অন্তর্বর্তী বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছে। এর
প্রধান থাকবেন ট্রাম্প নিজে। এটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীকে সীমান্ত
নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা প্রদান এবং গাজাকে সামরিকভাবে নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপক
ক্ষমতা দেয়। বোর্ড ও বাহিনীর অনুমোদনের মেয়াদ ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত।
